ইমরুল শাহেদ : দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর পর সৌদি আরব চলচ্চিত্র থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর দেশটিতে চলচ্চিত্র বাণিজ্য রমরমা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে দেশটিতে ১৫৪টি সিনেমা হল চালু আছে, যাতে ৫০০ স্ক্রিনে সিনেমা প্রদর্শিত হয়।
মার্কিন সাময়িকী ভ্যারাইটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পশ্চিম এশিয়ার চলচ্চিত্র বাজারে পরিণত হতে যাচ্ছে সৌদি আরব। ২০২০ সালে সৌদি আরবের চলচ্চিত্র বাজার থেকে আয় হয়েছে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে সেই আয় বেড়েছে তিন গুণ। ২০২১ সালে সিনেমার বাজার থেকে সৌদি আরবের আয় ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমন আয়ের ফলে গবেষণা সংস্থা ওমদিয়া ২০২৫ সালে সৌদি আরব বিশ্বের দশম বৃহত্তম সিনেবাজার হওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে। ভ্যারাইটির প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, সিনেমা পরিবেশনার দুবাইভিত্তিক সংস্থা ভক্স তিন বছর আগে সৌদি আরবে প্রবেশ করে। যারা এই তিন বছরে দেশটির ছয়টি শহরে নতুন ১৫টি সিনেমা হল খুলেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিনোদন প্রতিষ্ঠান ‘ভক্স সিনেমা’ সৌদি আরবে নতুন নতুন সিনেমা হল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ কার্যক্রমে ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে।
১৬ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের বিনিয়োগে সিনেমা হলের সঙ্গে শপিংমল, ফ্যাশন হাউজ, বিনোদন ও দোকানপাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার ফলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাড়বে আরও সিনেমা হল। তবে সেখানে সব ছবি প্রদর্শিত হতে দেওয়া হচ্ছে না। সংবেদনশীল ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বিষয়, যৌনতা এবং সমকামিতা স্পর্শ করে এমন সিনেমা এখনও নিষিদ্ধ আছে।
পশ্চিম এশিয়ার চলচ্চিত্রগুলো সবচেয়ে বেশি মুক্তি পায় সৌদিতে। শুধু তাই নয়, সৌদি আরব তাদের বিনোদন খাতে ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০১৮ সালে সিনেমা হলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির রাজপরিবার। একই বছর ১৮ এপ্রিল রিয়াদে চালু হয় দেশটির প্রথম সিনেমা হল। অল্প দিনেই দেশটিতে বাড়ছে হলের সংখ্যা, বাড়ছে দর্শকশ্রোতাও।
সৌদি আরবে ১৯৭০ সালের পর দেশটির ইসলামিক নেতারা সিনেমা হলগুলো বন্ধ করে দেন। এর পর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সেখানে কোনো সিনেমা হল ছিল না। এই সামগ্রিক বিনিয়োগ আগামী দশকে এই বাজারকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া সৌদি আরব বর্তমানে ড্যান্স মিউজিক ফেস্টিভ্যালের আয়োজনে জোর দিতে চায়। এরই মধ্যে সৌদি রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে দ্বিতীয় বারের মতো এমন একটি আয়োজন হয়েছে, যেখানে এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।