নতুন বছর বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশা জাগাচ্ছে
মাসুদ মিয়া : মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যে বাংলাদেশে শেয়ারবাজার বেশ চাঙ্গা ছিল। দীর্ঘ এক দশক পর ২০২১ সাল অধিকাংশ কার্যদিবস শেয়ারবাজার ছিল গতিশীল। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশা জাগাচ্ছে। দেশের প্রধান শেযারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর প্রধান সূচক ৭ হাজার ছুই ছুই করছে। লেনদেনও গতি বৃদ্ধি পেয়ে দেড় হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেছে।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরাও বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, বর্তমান শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত- উল- ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে গতি ফিরে এসেছে শেয়ারবাজারের। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। গড়তে থাকে একের পর এক নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে আবার ভাঙছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও দেশের শেয়ারবাজার বেশ চাঙ্গাভাবে কেটেছে। নতুন বছরের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বছরের প্রথম সপ্তাহের সব কয়দিনই বাজার ইতিবাচক ছিল। সপ্তাহের পাঁচ দিনই সূচক বেড়েছে। সূচকের সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। সপ্তাহটিতে সূচকের সাথে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে।
জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ৪২ হাজার ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ৬৪ হাজার ৪৫৪ টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৫৯ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীরা ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার ০০৫ টাকা ফিরে পেয়েছে। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ছয় হাজার ৪৮৮ কোটি ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৯ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল চার হাজার ১৬০ কোটি ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৮১৫ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন দুই হাজার ৩২৭ কোটি ৬৪ লাখ ১১ হাজার ৮৭৪ টাকা বা ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৩০.৭৯ পয়েন্ট বা ৩.৪২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৯৮৭.৪৫ পয়েন্টে।
অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪১.০৩ পয়েন্ট বা ২.৮৭ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭০.৫০ পয়েন্ট বা ২.৭৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৭২.১৫ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৬০৩.০৯ পয়েন্টে। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮২টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৮৬টির বা ৭৪.৮৭ শতাংশের, কমেছে ৮৬টির বা ২২.৫১ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির বা ২.৬২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর। এদিকে বিদায়ী বছরে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কঠোরতম লকডাউনের মধ্যেও ব্যাংকিং কার্যক্রমের সাথে সংগতি রেখে দেশের পুঁজিবাজার চালু থাকে। বাজার মূলধন ও লেনদেনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেশের শেয়ারবাজার। করোনা অতিমারীর মধ্যেও দীর্ঘ এক দশক পর প্রতিদিনই নিত্য নতুন রেকর্ড গড়ে শেয়ারবাজার। বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেয়ার বাজারে সূচক বেড়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে।