ভারতীয় নমনীয় ঋণে ৮ জেলায় স্থাপিত হবে হাইটেক পার্ক
সোহেল রহমান : তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে দেশের ১২টি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এর আওতায় ভারতীয় নমনীয় ঋণে প্রাথমিকভাবে দেশের ৮ জেলার ৮টি স্থানে স্থাপিত হতে যাচ্ছে হাই-টেক পার্ক। দুটি প্যাকেজের আওতায় ৪টি জেলা করে এ পার্ক স্থাপন করা হবে। দুটি প্যাকেজেরই (ডব্লিউডি-এ ও ডব্লিউডি-বি) কাজ পেতে যাচ্ছে ভারতের মুম্বাই-এর প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেড এস্টেট। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ২০৫ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় ৮ জেলার ৮টি স্থানে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্টিল স্ট্রাকচার বিশিষ্ট মাল্টি-পারপাস বিল্ডিং নির্মাণের মাধ্যমে আইটি/ হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের সব ড্রইং ও ডিজাইন ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। যেসব জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হবে সেগুলো হচ্ছে- প্যাকেজ ডব্লিউডি-এ-এর আওতায় রয়েছে রংপুর, নাটোর, জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলা এবং প্যাকেজ ডব্লিউডি-বি-এর আওতায় রয়েছে ঢাকা, খুলনা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলা। দুই প্যাকেজের মধ্যে প্যাকেজ ডব্লিউডি-এ বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬০৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ ডব্লিউডি-বি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পরিদর্শনকালে দেশের প্রতিটি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ-এর উদ্যোগে জেলা পর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়) শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণ ২৫২ কোটি ৪০ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং প্রকল্প সহায়তার (ভারতীয় ঋণ) পরিমাণ ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা ছিল ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে।
সূত্র জানায়, করোনাজনিত কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যবর্তী সীমান্ত পথ বিভিন্ন সময়ে বন্ধ থাকায় ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করতে না-পারার কারণে প্রায় ১০ বার প্যাকেজ দুটির সময়সীমা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্যাকেজ দুটির দরপত্র পুনরায় আহ্বান করা হয় এবং ঐ বছরই ২১ নভেম্বর তারিখে দরপত্রগুলো উন্মুক্ত করা হয়। এতে দেখা যায়, ডব্লিউডি-এ প্যাকেজের জন্য দুটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এবং ডব্লিউডি-বি প্যাকেজের জন্য তিনটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়েছে।
এর মধ্যে ডব্লিউডি-এ প্যাকেজের জন্য আবেদন করেছেÑ মহারাষ্ট্রের সুপ্রিম ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইন্ডিয়া লিমিটেড, এবং মুম্বাইয়ের লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেড এস্টেট। অন্যদিকে ডব্লিউডি-এ প্যাকেজের জন্য আবেদন করেছে- থিনডালের ইউআরসি কন্সট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড; মহারাষ্ট্রের সুপ্রিম ইন্ফ্রাস্টাকচার ইন্ডিয়া লিমিটেড ও মুম্বাইয়ের লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেড এস্টেট। দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুটি প্যাকেজের জন্য মুম্বাইয়ের লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেড এস্টেট-কে মনোনীত করেছে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে সম্মতি দিয়েছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।