‘মিজানুর রহমান খান আইনের ভাষাকে সাধারণের ভাষায় পরিণত করতে কাজ করেছেন’
অর্থনীতি ডেস্ক : আইন বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গতবছরের ১১ জানুয়ারি আমাদের মাঝ থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় নিয়েছেন। এই ক্ষণজন্মা পুরুষ তার কর্মজীবনে দেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অপরিসীম ধৈর্য ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে পদচিহ্ন রেখে গেছেন।
জাতীয় জীবনে তার অবদানকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের লক্ষ্যে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত আমাদের একজন মিজানুর রহমান খান ছিলেন শীর্ষক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্মরণ সভায় ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই কেবল আইন নিয়ে ভাববেন তা নিয়ম নয়। মিজানুর রহমান খান এ কথাটি প্রমাণ করে গিয়েছেন। আইনের ভাষাকে মিজানুর রহমান খান সাধারণ জনগণের ভাষাতে পরিণত করতে নিরলস কাজ করে গিয়েছেন।
আবু সাইদ খান বলেন, মিজানুর রহমান খান সাংবাদিক হিসাবে এই অঙ্গনে সর্বগ্রহণযোগ্য ও সর্বজন স্বীকৃত ছিলেন।
ড. আসিফ নজরুল তার বক্তব্যে বলেন, আইন সাংবাদিকতায় মিজানুর রহমান খান-এর শূন্যতা কোন কালেই পূরণীয় নয়। আমাদের দুর্ভাগ্য তার মতো সাংবাদিক আমরা সচরাচর খুজে পাই না।
সৈয়দা রিজয়ানা হাসান বলেন, আইনজ্ঞ হিসাবে মিজানুর রহমান খান বিভিন্ন তথ্যের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্তু তার চাহিদামতো তথ্য সরবরাহে আমি আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও হিমশিম খেতে হতো। তার জ্ঞানের সীমা ও জ্ঞান লাভের আকাঙ্ক্ষা আমাকে সব সময় মোহিত করত।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, মিজানুর রহমান খান নিরাপত্তার আশংকা থাকা সত্ত্বেও দেশের স্বার্থে অনেক বিষয়েই সাংবাদিকতা করে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাদের জন্য একজন প্রকৃত বুদ্ধিজবী ছিলেন, যা বর্তমান সময়ে আমাদের জাতীয় উন্নতির জন্য খুবই দরকার ছিল।
খুরশীদ আলম খান তার বক্তব্যে বলেন, আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক ২০০৬ হতে। তিনি আইন বিষয়ে যতটা বুঝতেন বাংলাদেশের আইনজ্ঞদেরও আমি ততটা বুঝতে দেখিনি।
ইলিয়াস খান বলেন, মিজানুর রহমান খান জানার জন্য সব সময়ই উদগ্রীব থাকতেন। তার সাংবাদিকতার জীবনে জ্ঞানার্জন ছাড়া অন্য কোন দিকে তাঁর তেমন কোনা আগ্রহই ছিল না।
বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, মিজানুর রহমান খান একজন সাংবাদিক হলেও আইন অঙ্গনে তার অবদান জাতি স্মরণে রাখবে।
হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের পথচলা শুরুই মিজানুর রহমান খানের হাত ধরে। সম্পর্কের দায় আর হারানোর পীড়ন থেকেই আজকের এই স্মরণসভার আয়োজন। আমরা তার মতো অভিভাবক হয়তো আর পাবো না, কিন্তু তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন এগিয়ে যাবে।
অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় উক্ত স্মরণ সভায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাইদ খান, নিরাপদ সড়ক চাই’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, মানবাধিকারকর্মী নুর খানসহ প্রমুখ। প্রয়াত মিজানুর রহমান খানের সহধর্মিনী, জ্যেষ্ঠ পুত্র সাদমান খান, ছোট ভাই মশিউর রহমান খানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দও এসময় উপস্থিত ছিলেন।