ডিএসইতে ২৪৩ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার দুই কার্যদিবস সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার সূচকের নি¤œমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সূচক ও লেনদেন কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
তবে এই পতনের বাজারেও চার কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিস্টরা বলেন, টানা ২ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে এর আগে একদিন বাদে টানা ৬ কার্যদিবস সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে। সংশ্লিষ্টরা আরও মনে করেন, টানা বৃদ্ধি শেয়ারবাজারের জন্য ভালো না আবার টানা কমাও ভালো না। এই দরপতনের আগে বাজার কিন্তু অনেকটাই উঠেছে। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ হয়তো এখন প্রফিট টেকিং করছেন। ফলে বিক্রির চাপ বাড়ায় দরপতন হয়েছে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, যা প্রথম দুই ঘণ্টা অব্যাহত থাকে।
তবে লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এসে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে থাকে। ফলে দেখতে দেখতে সূচকের বড় পতন হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৬০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৬৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩১২ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও চারটি কোম্পানির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।
এই ৪ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, তাল্লু স্পিনিং মিলস, আরএকে সিরামিক এবং রংপুর ফাউন্ড্রি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হলেও এক পর্যায়ে বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অর্থাৎ যাদের কাছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার আছে তারা বিক্রি করতে চাচ্ছিলেন না।
এদিকে সূচকের বড় পতনের বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার। কোম্পানিটির ১০১ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯৬ কোটি ৪৪ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
লনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- ফরচুন সুজ, বেক্সিমকো লি., বিএসসি, পাওয়ার গ্রীড, আরএকে সিরামিক, তিতাস গ্যাস, রবি অজিয়াটা, ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিএসসিসিএল ও বসুন্ধরা পেপার।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- তৌফিকা ফুডস, আরএকে সিরামিক, রংপুর ফাউন্ড্রী, এএমসিএল (প্রান), রবি অজিয়াটা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মুন্নু এগ্রো, এসআইবিএল, ফরচুন সুজ ও আমান কটন।
অন্যদিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- বিএসসি, দুলামিয়া কটন, ডেসকো, ন্যাশনাল টিউবস, পাওয়ার গ্রীড, বিএসসিসিএল, ন্যাশনাল হাউজিং, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, এটলাস বাংলাদেশ ও পেনিনসুলা বাংলাদেশ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৪টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।