স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই, মুখে নেই মাস্ক
শরীফ শাওন : দেশের করোনা সংক্রমন আবারও ঊর্ধ্বমুখী। সংক্রমণ রোধে জনসাধারণের চলাচলে ১১টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। নির্দেশনা মানাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থার কথাও জানানো হয়েছে। তবে বিধিনিষেধের প্রথম দিনেই রাজধানীতে তার কোন বাস্তবায়ন চোখে পড়েনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জনসাধারণের মাঝে মাস্ক পরার প্রবণতা কিছুটা বেশি পরিলক্ষিত হলেও জনসমাগম, গণপরিবহন, বাজার বা হোটেল-রেস্তোরায় স্বাস্থ্যবিধির কোন নির্দেশনাই মানতে দেখা যায়নি। এদিন সকাল থেকে মিরপুর, বনানী, মহাখালি, মগবাজার, কাওরান বাজার, পল্টন, কলাবাগান, সাইন্সল্যাব ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। বিধি নিষেধে বলা হয়েছে, গণপরিবহনে চালক-হেলপার এবং যাত্রীদের টিকা সনদ বাধ্যতামুলক। এছাড়াও হোটেল রেস্তোরায় কর্মরত শ্রমিক এবং ভোক্তাদের ক্ষেত্রেও টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় প্রথম দিনেই চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে নির্দেশনা বাস্তবায়ন।
মিরপুরে আল মক্কার একটি বাসে দেখা যায়, অধিকাংশ যাত্রীদের মুখে মাস্ক নেই, যাত্রী বহনে দেখা হচ্ছে না টিকা সনদ। জানতে চাইলে চালক ও হেলপার জানান, তাদের কাছেও নেই টিকা সনদ। পল্লবীতে বিরিয়ানির হোটেল ম্যানেজারও জানান, টিকা সনদ না থাকায় কর্মসংস্থান নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নিজেই। এছাড়াও সনদ যাচাই করতে গেলে ভোক্তা কমে যাবে। তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ার সঙ্গে নিজেদের চাকরি হারানোরও সম্ভাবনা রয়েছে। কাওরান বাজারে মুদি দোকানদার জানান, ভোক্তাদের সনদ যাচাই করতে গিয়ে বাড়তি বিড়ম্বনায় পড়তে চাই না। এগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহীনি ও ভ্রাম্যমান আদালতের দায়িত্ব।
নতুন বিধিনিষেধ ও কড়াকড়ির বিষয়ে জানা নেই বলেছেন কাওরান বাজার ও নিউমার্কেটে আসা অনেক ক্রেতা। ক্রেতা ডা. দীপু সরোয়ার জানান, করোনার বিধিনিষেধ প্রচারে এর আগে ব্যপক প্রচার প্রচারণা করা হলেও, এবার তেমন কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। পত্র পত্রিকা বা টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন ও মাইকিংসহ বিভিন্ন উপায়ে এই প্রচারণার প্রয়োজন ছিলো। এছাড়াও রাস্তা-ঘাট বা বাজারগুলোতেও প্রশাষনের তেমন কোন কর্মকা- না থাকায় অবহেলিত হচ্ছে সরকারের নির্দেশনা।
এদিকে দুপুর ১২টায় শাহাবাগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী মেজিস্ট্রেট সঞ্জীব দাশ। তিনি বলেন, মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় মনিটরিং কার্যক্রম চলছে। অনেকেই থুতনির নিচে মাস্ক ঝুলিয়ে রেখেছেন, কেউবা পকেটে রেখে চরাফেরা করছেন। তবে অধিকাংশের কাছেই মাস্ক নেই। মাস্কের সঠিক ব্যবহার না করায় কয়েকজনকে ৫০ থেকে ২০০টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা ছাড়াও বাকিদের মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তাদেরকে মোট দুই হাজার ৫৫০টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা আদায় নয়, সকলকে সতর্ক করাই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।