নির্বাচন কমিশন ঠুটো জগন্নাথ : তৈমূর
অর্থনীতি ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ১৬ ডিসেম্বর বিএনপির বিজয় র্যালীতে আমি রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে যাইনি। অথচ সরকারি দলের প্রার্থী এমপিদের নিয়ে একের পর এক সমাবেশ করে যাচ্ছে। তারা আমাকে আমার কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে তিনটি অভিযোগ দিয়েছি। তোড়ণ নির্মাণ ও সড়ক দখল করে মার্কা স্থাপন করা আচরণবিধির লঙ্ঘন। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল তারা তোড়ণ ভেঙে দিবে। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
এছাড়াও অন্যান্য আচরনবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারেও বার বার অবহিত করা হয়েছে। তারা শুধু আশ্বাস দিয়েছে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। জনগণের মনের ধারণা নির্বাচন কমিশন একটা ঠুটো জগন্নাথ তারা সেই পথেই হাঁটছেন। তারপরেও আমি নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে চাই।
শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তৈমূর বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হোটেলগুলো চেক করলেই দেখতে পারবেন বিভিন্ন জেলার সরকার দলীয় নেতারা এখানে অবস্থান করছে। সার্কিট হাউজ, ডাক বাংলাকে নির্বাচনের কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে। আইনানুসারে সরকারি কোন গাড়ি কোন ডাকবাংলো ব্যবহার করার নিয়ম নেই। এটা আচরনবিধি লঙ্ঘন।
এই আচরনবিধি লঙ্ঘন করেই আমাদের সরকারি দলের মেহমানরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক তার কিছু সঙ্গী নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে আলাপ করেছেন। তিনি অবশ্য বলেছেন তিনি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে যাননি। কিন্তু তার বক্তব্য ও দেখা করতে যাওয়ার সাথে কোন সমন্বয় নেই। প্রথমত তিনি নির্বাচনের আগে কোনভাবেই প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। তিনি নারায়ণগঞ্জের নাগরিকও না। এটা আইনগতভাবে আমি অন্যায় মনে করি। তিনি জনগণে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। এটা একজন উচ্চ পর্যায়ের সম্মানিত নেতার কাছ থেকে আমরা আশা করি না।
এ ধরনের কর্মকা-ে- জনগণ সন্দিহান হয়ে পড়েছে। আমি বাংলাদেশের যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সেই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই নারায়ণগঞ্জের মানুষ প্রত্যাশা করে আপনি এ দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার মালিক হয়ে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনকে নির্বিঘœ, স্বচ্ছ এবং সুন্দরভাবে করার জন্য ব্যবস্থা নিবেন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের যদি ব্যালটের মাধ্যমে আশার প্রতিফলন ঘটে এতে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা অত্যন্ত আস্থার সাথে অনেকগুলো অভিযোগ করেছিলাম। সে অভিযোগের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নি বরং সে সকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের চাহিদার কারনেই আমি নির্বাচনে এসেছি। পক্ষান্তরে আমাকে আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী বিভিন্ন উপাধি দিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। আমি আমার কোন প্রার্থীর প্রতি ব্যাক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য রাখিনি এবং ভবিষ্যতেও রাখব না।
তিনি বলেন, গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমি নাকি বসে পড়ব। বসে পড়ার জন্য নির্বাচনে নামিনি। নির্বাচন করার জন্য নেমেছি। আমি একটা দল করি। আমি বিএনপির একজন সক্রিয় সদস্য। এই দলের জন্য রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছি। মিডিয়াতে দেখেছেন পুলিশ কতবার শারীরিক ভাবে নির্যাতিত করেছে। তখন আমি দলের ক্যান্ডিডেট ছিলাম। নেত্রীর নির্দেশে আমি সরে দাড়াই। আজ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করিনি কেন আমাকে সরিয়ে দেয়া হল।
কারন আমি মনে করি আমি দল করি দলের প্রতি আমার অনুগত থাকা দরকার। তাই আমি দলের প্রতি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ নারায়ণগঞ্জের একটি সভায় বলেছিলেন একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করতে এবং আরেকজনকে পরাজিত করতে আমরা তৈমূরকে বসিয়েছি। সেটাও আমি মাথা পেতে নিয়েছি। ২০১৬ সালে আমাকে মনোনীত করা হলেও আমি নির্বাচন করিনি। শহরবাসীকে দুর্ভোগ লাঘবের জন্যেই আজ আমাকে নির্বাচনে নামতে হয়েছে।
পুনর্বাসন ছাড়া কোন হকারের পেটে লাথি দেয়া যাবে না কারও ছাদ কেড়ে নেয়া যাবে না। মৌলিক চাহিদার ওপর পৃথিবীতে কোন আইন নেই। নারায়ণগঞ্জের জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে চলবে হকাররাও পুনর্বাসিত হবে। শহরে যানজট থাকবে না। সূত্র : বার্তা ২৪, এনটিভি অনলাইন