১১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ বাড়ছে আগামী বাজেটে
সোহেল রহমান : সার ও বিদ্যুৎ খাতে লোকসান বেড়ে যাওয়ায় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ খাতে বরাদ্দ প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে এটি বেড়ে ৬০ হাজার কোটি টাকা দাঁড়াতে পারে। যা চলতি অর্থবছরে তুলনায় প্রায় ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আগামী বাজেটে ভর্তুকির সিংহভাগ অর্থই ব্যয় করা হবে কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে। কৃষি খাতের মধ্যে মূলত: সার খাতে ভর্তুকির বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে। এরপরই বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে কোন্ খাতে কত ভর্তুকি দেয়া হবে- সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আগামী মার্চে এটি প্রাক্কলন করা হবে।
জানা যায়, এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক পার হতেই ভর্তুকির চাপ বেড়ে চলেছে। গত বছরের অক্টোবর/নভেম্বর থেকে বাড়তি ভর্তুকির চাহিদাপত্র পাঠাতে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এসব চাহিদার শীর্ষে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি বিভাগ। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয় জন্য ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা রয়েছে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, বিশ্ববাজারে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই ভর্তুকিতে তাদের পোষাবে না। এজন্য তাদের অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা দরকার। অন্যদিকে লোকসান কমাতে বিদ্যুৎ বিভাগ চাইছে অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা।
অন্যথায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি বিভাগের জন্য এবারের বাজেটে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু এলএনজি খাতের (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) জন্য বরাদ্দ ৬ হাজার কোটি টাকা।
জানা যায়, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়ানোর বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই এ দুটি পণ্যের দাম বাড়ানো হতে পারে। এর আগে গত ডিসেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যান্যের মধ্যে চলতি অর্থবছরে খাদ্য খাতে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ রাখা রয়েছে ১১ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে রপ্তানি প্রণোদনা ৬ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা, পাট খাতে ৮০০ কোটি টাকা এবং রেমিট্যান্স খাতে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ঋণ হিসেবে কিছু ভর্তুকি টাকাও এর সঙ্গে হয়েছে।