কয়েদিদের হাতে তৈরি পণ্য বাণিজ্য মেলায় নজর কেড়ছে
মো. আখতারুজ্জামান : রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল উপশহরের স্থায়ী ভেন্যু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না এক্সিবিশন সেন্টারে প্রথম বারের মতো চলছে মাসব্যাপী ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। প্রথম দিকে তেমন দর্শনার্থী না থাকলে যতই দিন যাচ্ছে, বাড়ছে ভিড় ও বেচাকেনা। এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি নানা পণ্যের পাশাপাশি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কয়েদিদের হাতে তৈরি বিভিন্ন পণ্য।
সোমবার দেখা গেছে, কয়েদিদের তৈরি পণ্য-সামগ্রীর স্টল কারা পণ্য, বাংলাদেশ জেলে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। অপেক্ষাকৃত দামে কম, মানে ভালো হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। এই স্টোল থেকে যে যার মতো পছন্দের পণ্য ক্রয় করে নিচ্ছেন। রাজধানীর মুগদা থেকে আসা রাবেয়া আক্তার রুমি বলেন, কয়েদিদের তৈরী পণ্যগুলো টেকসই। দামও হাতের নাগালে। তাই কিছু সৌখিন ও প্রয়োজনীয় পণ্য কিনেছি। কয়েদিদের পণ্যের স্টলটি ব্যতিক্রম। মেলায় একমাত্র এ স্টলেই কম দামে টেকসই ও ভালো মানের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকেই এখান থেকে কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
বাড্ডা থেকে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, কারাগারে বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের আলোর মুখ দেখাতে কর্মদক্ষতা দিয়ে তৈরি করা হয়। তারা যেন শাস্তি শেষে বাড়ি ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে- সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরকারী সংস্থা বাংলাদেশ জেল কয়েদিদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্পের কাজ করাচ্ছে। বাণিজ্য মেলায় এসব পণ্যের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
প্রথম ১৫ দিনে মেলায় প্রবেশের টিকিট বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে ১৪ জানুয়ারি (শুক্রবার)।
মেলার ইজারাদার ও মেসার্স মীর ব্রাদার্সের অপারেশনাল ম্যানেজার ছাইদুর রহমান (বাবু) বলেন, মেলায় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট সাড়ে ৬ লাখ টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম কয়েকদিন এক-দুই হাজার করে টিকিটি বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি বাড়ছে। আশা করছি যতই সময় গড়াবে টিকিট বিক্রি আরো বাড়বে।
সোমবার দেখা গেছে, মেলায় দর্শনার্থীর ভিড় যথেষ্ট। প্যাভিলিয়ন ও স্টলে ক্রেতা-বিক্রেতারা কেনাবেচায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় দেশি-বিদেশি মোট ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি ৬টি স্টল ও ৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। বাকিগুলো দেশি স্টল।
এবারও প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, জেনারেল স্টল, ফুডকোর্ট, মিনি স্টল, প্রিমিয়ার স্টল ক্যাটাগরি রয়েছে। মিলনায়তনের ভেতরে নিজস্ব একটা ক্যাফেটেরিয়া রাখা হয়েছে। সেখানে এক সঙ্গে ৫০০ লোক বসে খাবার খেতে পারেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলছে। তবে ছুটির দিনে মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
এবার মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ৩০ কাউন্টার করা হয়েছে। এছাড়া বিকাশের কাউন্টার রয়েছে ১৫ থেকে ২০টি। কেউ বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুললে একটি টিকিট ফ্রি দিচ্ছে। আবার কাউন্টারে না গিয়ে কেউ যদি বিকাশে টিকিট নেন তাদের জন্য ছাড় রয়েছে ৫০ শতাংশ।