হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের জন্য কেনা হচ্ছে ৩ সেট ইডিএস
সোহেল রহমান : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের জন্য আরো ৩ সেট এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস) কিনবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃক্ষ (বেবিচক)। বিমান বন্দরের কার্গো ভিলেজে কার্গো স্ক্যানিং ও নিউইয়র্কগামী প্যাসেঞ্জার ফ্লাইটের হোল্ড ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য এগুলো বসানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান লেইডস এসডিএ’র তৈরি ইডিএস তিনটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সরবরাহ করবে দেশীয় প্রতিষ্ঠান আপডেট এভিয়েশন লিমিটেড। প্রতিটি ইডিএস-এর প্রস্তাবিত দর ১৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা হিসেবে এতে মোট ব্যয় হবে ৪১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
জানা যায়, ইতিপূর্বে একই প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও সরবরাহকারীর কাছ থেকে গত বছর জুনে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য ১৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় ১টি ইডিএস মেশিন ক্রয় করা হয়েছে।
ইডিএস কেনা প্রসঙ্গে বেবিচক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ থেকে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। নিউইয়র্ক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত ১ সেট ইডিএস মেশিন প্রয়োজন। আগামী জুনে ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিন্সট্রেশন (টিএসএ)-এর নিউইয়র্কগামী বিমানের ফ্লাইটের জন্য অডিট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টিএসএ অডিটের আগেই ক্রয় করা ইডিএসগুলোর অপারেশন হওয়া জরুরি।
জানা যায়, প্রস্তাবিত ইডিএস তিনটি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কেনার জন্য বেবিচক-কে নির্দেশ দিয়েছিল বেসমারিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
এর পরিবর্তে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বেবিচক সূত্র জানায়, নিউইয়র্কগামী বিমানের ফ্লাইটের হোল্ড ব্যাগেজ শতভাগ এক্সপ্লোসিভ স্ক্রিনিং করা বাধ্যতামূলক এবং ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সব হোল্ড ব্যাগেজের এক্সপ্লোসিভ স্ক্রিনিং করার বিষয়টি বিবেচনধীন। ইডিএস মেশিন ক্রয়ের পর সংস্থান, ভ্যালিডেশন, লাগেজ ফ্লো এর সঙ্গে সিস্টেম ইনট্রেপ্রেশন সময় সাপেক্ষ বিধায় জরুরি ভিত্তিতে ক্রয় কাজ সম্পন্ন করা দরকার।
জানা যায়, বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য ২ সেট এবং রপ্তানি কার্গো স্ক্যানিংয়ের জন্য ২ সেটসহ মোট চার সেট ইডিএস মেশিন রয়েছে। রপ্তানি কার্গো স্ক্যানিং মেশিন ২ সেট আমেরিকার তৈরি (মডেল- মরফো ৯৮০ডিএসআই) যা ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তারিখে ইনস্টলেশন ও কমিশনিং করা হয়। এগুলোর তিন বছর ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়। এরপর ২০২১ সালের মে মাসে ১টি মেশিন অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং অপরটি বার বার নষ্ট হতে থাকে। ঠিকাদার নিয়োগ করে একটি মেশিন সচল করা হলেও কিছুদিন পর কারিগরি জটিলতা দেখা দেয়। খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে অপর মেশিনটি সচল করা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না বলে মনে করছে বেবিচক। এমতাবস্থায় ২টি মেশিন পুরাতন প্রযুক্তি ও টিএসএ গ্রান্ডফাদার্ড লিস্টেড যা প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন।
এছাড়া জাইকা অর্থায়নে আরএ-৩ (রেগুলেটেড এজেন্ট থার্ড কান্ট্রি ভ্যালিডেশন প্রসেস) এরিয়াতে ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম (বিএইচএস)সহ র্যাপিসেন কোম্পানি আরটিটি-১১০ মডেলের সংস্থাপিত ২টি ইডিএস মেশিন দিয়ে ইইউ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভ্যালিডেশন অনুযায়ী শুধুমাত্র ইউরোপগামী কার্গোর নিরাপত্তা স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।