জহিরুল ইসলাম : উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কাফনের কাপড় পরিধান করে প্রতীকী প্রতিবাদ মিছিল করেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী স্ট্রেচারে করে প্রতীকী এক শিক্ষার্থী লাশ বহন করেন তারা।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বিকাল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্ত্বরে জমায়েত হতে শুরু করে।
পরে গোলচত্বর থেকে কাফনের কাপড় পরিধান করে প্রতিবাদি মৌন মিছিল বের করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী। মৌন মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
মৌন মিছিলের উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলনকারীদের পক্ষে হাসিবুর রহমান বলেন, আমাদের এ কাফন পরিধান একটা প্রতীকী চিত্র মাত্র। কিন্তু কিছুক্ষণ পর এ চিত্র বাস্তবে রূপও নিতে পারে। আমাদের যারা ভাই-বোন অনশনে রয়েছে, তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন চিত্র হতেও পারে। অনশনে যারা আছে তারা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ না করছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা অনশন ভাঙবে না।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা ৬টায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে মোমবাতি প্রজ্বলন করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে গত বুধবার বিকাল থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী বসেছেন আমরণ অনশনে। উপাচার্য পদ না ছাড়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
অনশনের ৩ দিনের মাথায় ২২ জানুয়ারি শনিবার দুপুর পর্যন্ত অনশনরতদের মধ্য থেকে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। আর বাকি প্রায় সবার শরীরে স্যালাইন পুশ করা হচ্ছে।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানা যায়। ২৪ জন অনশনে বসলেও বাবার অসুস্থতাজনিত কারণে একজন বাসায় চলে গেছেন। শনিবার সকাল পর্যন্ত বাকি ২৩ জনের প্রায় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ১৬ জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া হাসপাতাল ও মাউন্ড এডোরা হসপাতালপ ভর্তি করা হয়েছে। সর্বেশেষ ১১টার দিকে এক ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাকিদের প্রায় সবার শরীরে দেয়া হচ্ছে স্যালাইন।
অসুস্থ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে দুটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীর মধ্যে কাজল দাস ও আব্দুল্লাহ আর রাফি শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ফিরে ক্যাম্পাসে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবার অনশন শুরু করেন।