দেশীয় বাজারের বেশির ভাগই ভারতীয় মধুর দখলে
মতিনুজ্জামান মিটু : আমদানিকরা মধুর চেয়ে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মধুর পাইকারি বাজারমূল্য অনেক কম। বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ জানান, শুধু ভারত থেকে আমদানিকরা মধুই দেশীয় বাজারের ৭৩.৭ শতাংশ দখল করে আছে।
বিশ্ব বাজারের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান রপ্তানিতে ৮৩তম ও আমদানিতে ৬৬তম। কিন্তু আশার কথা ২০১৯ সালে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ৬৪.৫ শতাংশ মধু। আর বিশ্বে মোট রপ্তানিকরা মধু থেকে আয় ১ কোটি ৫৩ লাখ ৪২ হাজার ৫৩,৪২,০০০ মার্কিন ডলার এবং আমদানিতে মোট ব্যয় ১১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে শিল্পায়নে ও কারুশিল্পে প্রোপোলিস ও মম এর চাহিদা বহুগুণে বেড়েছে। এক প্যাকেট (৬০০ গ্রাম) পরাগরেণুর খুচরা বাজার মূল্য ৩০০০ থেকে ৪০০০ টাকা।
রাজকীয় জেলি, মৌ বিষ এর বাজার এদেশে এখনও তৈরি হয়ে ওঠেনি, তবে বিশ্ব বাজারে এর গুরুত্ব অনেক। দেশের বর্তমান মাঠ ফসল, শস্য চক্র ও সময় বিবেচনা করে মধু উৎপাদন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টন পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। বিশ্ব বাজারে প্রতি কেজি মধুর দাম ৩.৫৩ মার্কিন ডলার; মোট উৎপাদিত মধুর পরিমাণ ১.৭৯ মিলিয়ন টন (২০১৬); মধু উৎপাদনে প্রথম চীন (২৭.৫শতাংশ), রপ্তানিতে প্রথম নিউজিল্যান্ড (১১.১শতাংশ) ও আমদানিতে প্রথম আমেরিকা (২০.৯ শতাংশ)।
তিনি আরও জানান, মানুষ যে খাবার খায় তার তিন ভাগের এক ভাগ আসে মৌমাছির পরাগায়ন থেকে। পরিসংখ্যানের দিক থেকে, কীটপতঙ্গের মাধ্যমে যেসব উদ্ভিদের পরপরাগায়ন হয় তাতে শুধু মৌমাছির অবদানই ৮০শতাংশ (অন্তত ১ লাখ ৩০ হাজার উদ্ভিদ)। বর্তমানে মানুষ খাবার হিসেবে যে ফলমূল, শাকসবজির ওপর বেশি নির্ভরশীল সেগুলোর ৭০ শতাংশ উৎপন্ন হয় মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে। পৃথিবীতে প্রতি বছরে যে পরিমাণ খাদ্য মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে উৎপাদিত হয় সেগুলোর আর্থিক মূল্য আনুমানিক ২২ হাজার কোটি ডলার। এ অর্থনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে বিশ্বব্যাপী ১৪০ কোটি মানুষের জীবিকা। বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাবারের জোগান দিতে প্রয়োজন বাড়তি উৎপাদন। মৌমাছির সহায়তা ছাড়া যা এক প্রকার অসম্ভব। তাই মৌমাছির জীবন হুমকির মুখে পড়লে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও হুমকির মুখে পড়বে।
আর একটি মৌচাকে যত মৌমাছি বাস করে তার চারপাশে ৪ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে যত ফুল ফোটে, একদিনে সেগুলোতে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ ও পরাগায়ন করতে সাহায্য করে এসব মৌমাছি। মৌমাছির মাধ্যমে পরাগায়ন হয় এমন ফল ও সবজির তালিকা অনেক লম্বা। যেসব ফল ও সবজি উৎপাদনে মৌমাছির প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে সেগুলোর মধ্যে আলু, পেঁয়াজ, সরিষা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, মরিচ, পেঁপে, বাদাম, তরমুজ, কমলা, আঙুর, কুমড়া, লেবু, গাজর, লিচু, আপেল, আম, শিম, টমেটো অন্যতম।
রাজশাহী, দিনাজপুর, ঈশ্বরদী, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর প্রভৃতি জেলায় লিচু, আম, সরিষার মধু প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়। গোপালগঞ্জ আবার কালোজিরা ও ধনিয়া মধুর জন্য বিখ্যাত। মধুর জন্য নাম রয়েছে টাঙ্গাইলের লালমাটির মধুপুর এলাকার মধুপুর, মুক্তাগাছা, ফুলবাড়ীয়া, ঘাটাইল, সখীপুর, ভালুকা ও জামালপুর সদর উপজেলায় আনারস, কাঁঠাল, কলা, সরিষা, তিল, তিসি, জলপাই, লিচু, আম, পেঁপে, কুল, আদা, হলুদ, মিষ্টিকুমরা, লাউ, শিম, আলু, কাসাভা, কপি, গাজর, মুলাসহ বিভিন্ন কৃষিজ ফসল বাণিজ্যিকভিত্তিতে উৎপাদন করা হয়। ফলে এসব এলাকায় রয়েছে অনেক মৌচাষি।
বীজ ও ভালো ফসল উৎপাদনে পরাগায়ন অত্যাবশ্যক, বীজ ফসলের মাঠে কীটপতঙ্গ দিয়ে পরাগায়ন অধিক কার্যকর।
প্রাচীনকাল থেকেই মৌমাছি মানুষের কাছে সামাজিক পতঙ্গ হিসেবে পরিচিত কারণ এরা দলবদ্ধভাবে বাস করে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন এর মতে, গবেষণা থেকে প্রাপ্ত যে মৌমাছিরা ফুলের পরাগায়ন ঘটিয়ে বনজ, ফলদ ও কৃষিজ ফসলের উৎপাদন ২৫ থেকে ৩০শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। উৎপাদিত বাড়তি ফসলের মূল্য মোট উৎপাদিত মধু ও মোমের মূল্যের ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি। মৌমাছিকে তাদেও প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে এনে মৌচাকের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পালন করাই মূলত মৌমাছি পালন।
একটি মৌচাকে গড়ে প্রায় ২০ হাজার মৌমাছি থাকে। একটি চাকে সাধারণত ৩ শ্রেণির মৌমাছি থাকে একটি রানী মৌমাছি যা প্রজননে অংশ নেয়; ড্রোন বা পুরুষ মৌমাছি, কর্মী মৌমাছি। রানী মৌমাছি সবচেয়ে বড় প্রকৃতির। একটি চাকে একটি মাত্র রানী মৌমাছি থাকে। এর একমাত্র কাজ ডিম পাড়া। পুরুষ মৌমাছি মধ্যম আকৃতির ও এদের চোখ বড় কিন্তু হুল নেই, একমাত্র কাজ রানীর সাথে মিলিত হওয়া। শ্রমিক মৌমাছি সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির। এদের চোখ ছোট, কিন্তু হুল আছে। রানী ও পুরুষ বাদে অবশিষ্ট সকল সদস্যই শ্রমিক মৌমাছি। এরা নানা দলে ভাগ হয়ে চাকের যাবতীয় কাজ যথা- চাক নির্মাণ করা, ফুলের মিষ্টি রস ও পরাগরেণু সংগ্রহ করা, মধু তৈরি করা, চাকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, চাকে বাতাস দেয়া চাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
ফসল ও পরাগায়নের ধরন অনুযায়ী মৌমাছির বাসা নির্বাচন করা হয়। বাঙ্গি ফসলে ১০টি ফুলের জন্য একটি মৌমাছি যথেষ্ট। শসা, তরমুজ, মিষ্টিকুমড়া আর লাউয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ ফুলের জন্য একটি মৌমাছির উপস্থিতির প্রয়োজন হয়। বাঁধাকপি, ফুলকপি প্রভৃতি ফসলের ক্ষেত্রে হেক্টরপ্রতি ফসলের (বীজ) জন্য দুটি বা তিনটি মৌমাছির বাসা মাঠের উপযুক্ত স্থানে বসিয়ে দিলেই পরাগায়ন নিশ্চিত হয়। মুলার ক্ষেত্রে যেহেতু ফুল একেবারেই আকর্ষণীয় নয়, সেজন্য মাঠে অধিক সংখ্যক কীটপতঙ্গের উপস্থিতির প্রয়োজন হয়। তাই প্রতি হেক্টর মুলার জমিতে তিন-চারটি মৌমাছির বাসা মাঠে বসিয়ে দিলে বীজের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পায়। পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কমসংখ্যক মৌমাছির উপস্থিতির প্রয়োজন হয়। এক থেকে ১০ হেক্টর পেঁয়াজের ফসলের (বীজ) মাঠে একটি মৌমাছির বাসা বসিয়ে দিলেই চলে। গাজরে একই সঙ্গে বায়ু পরাগায়ন ও কীটপতঙ্গ পরাগায়ন সম্পন্ন হয়। তবে মৌমাছি গাজরের পরাগায়নে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। প্রতি হেক্টর গাজরের জমিতে একাধিক মৌমাছির বাসা স্থাপন করলে ভালো কাজ হয়। ধান সাধারণত বায়ু পরাগায়নে নির্ভরশীল। ধান ক্ষেতের পাশে মৌ বাক্স বসালে ধানের ফলন অন্য ক্ষেতের চেয়ে বেশি হয়।
আবহমানকাল থেকে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ বাংলাদেশের নিজেস্ব খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে মধু অন্যতম। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ তবে পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন করতে মধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ মধু শর্করা জাতীয় খাদ্য হলেও বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, এনজাইম ও খনিজ পদার্থ থাকে। একে সব রোগের মহাষৌধ বলা হয়। মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। মধু দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে। মধুতে যে ডেক্সট্রিন ও শর্করা থাকে তা সহজেই হজম হয়, সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করে। প্রাকৃতিকভাবে মধুর বড় একটি উৎস সুন্দরবন, যার কেওড়া ও খলিসা ফুল মৌমাছিদের প্রথম পছন্দ। কানাডিয়ান হানি কাউন্সিল এর তথ্য অনুযায়ী এক পাউন্ড মধু উৎপাদনে মৌমাছিদের প্রায় ২০ লাখ ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে হয়, যার জন্য প্রায় ৮০,০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। একটি মৌমাছি তার জীবনে এক চা চামচ পরিমাণ মধু সংগ্রহ করে। মধু ছাড়াও মৌমাছি থেকে পাওয়া অন্যান্য পণ্যের মাঝে রয়েছে মোম, পরাগরেণু, প্রোপোলিস, রাজকীয় জেলি, মৌবিষ ইত্যাদি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের বরাতে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. ফ. ম. মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশে মৌ চাষের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে সারাদেশে মৌ চাষের আওতায় জমির পরিমাণ ছিল ১০৯৩৩৭হেক্টর। এতে ১০৫১৫৪টি বক্স বসিয়ে ৭,৫৭,৯৯৫ কেজি মধু উৎপাদন করা হয়। দেশে মধু উৎপাদনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আছে প্রায় ১৮ হাজার মৌচাষি। চাষি ছাড়াও বিভিন্নভাবে মধু শিল্পে কর্মরত আছেন প্রায় ২ লাখ মানুষ। দুই হাজার মৌ খামার স্থাপিত রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭টি মৌচাষিদের সংগঠন রয়েছে। বর্তমানে মাত্র ১,১৫১ জন সক্রিয় মৌখামাড়ি মৌ পালনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে নতুন পুরাতন মিলিয়ে আরও ৭০,০০০ কৃষককে মৌ চাষের সাথে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
বর্তমানে উৎপাদিত মধুর পরিমাণ প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ মেট্রিক টন। ৭ টি বেসরকারি মধু প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র রয়েছে। মাত্র ৩টি মৌপালন বাক্স তৈরির ছোট কারখানা ও ২টি মৌমাছি পালন আনুষঙ্গিক সরবরাহকারী রয়েছে। সরিষা, কালোজিরা, ধনিয়াসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠে স্থাপিত মৌ বাক্স থেকে মধু উৎপাদন করা হয়। মৌ চাষ সম্পর্কিত ডিএই এর ভিশন : আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মৌ চাষ কার্যক্রম গ্রহণে আগ্রহী লাখ জনগোষ্ঠীকে মৌ চাষে উদ্বুদ্ধকরণসহ অধিক মধু উৎপাদনের মধ্য দিয়ে দেশে খাঁটি মধুর চাহিদা পূরণ, সফল পরাগায়নের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি তথা দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে অবদান রাখা সম্ভব।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প। প্রকল্পে মৌ চাষ সম্পৃক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ ফলন বৃদ্ধিসহ মধু উৎপাদন এবং পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ উৎসাহিত হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ২০০০ আধুনিক মৌবাক্স বিতরণ করা হয়েছে।
পর্যাপ্ত ফসলি জমি ও চারণভূমির অভাব এবং বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাবে বিশ্বেই মৌমাছির স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে মানসম্পন্ন মধু ও মোমের উৎপাদন বাড়াতে মৌ-রানীর (রানী মৌমাছি) কৃত্রিম প্রজনন করা হয়। যদিও রানী প্রজননের ক্ষেত্রটি এদেশে নতুন। কৃত্রিম মৌ প্রজনন পদ্ধতিতে রানী মৌমাছির সংখ্যা যেমন বাড়ানো যায়, তেমনি প্রাকৃতিক উপায়ে মৌ চাষকে সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে দেশের মানুষ গ্রহণ করলে দেশের বেকার সমস্যা অনেকখানি দূর হবে।
প্রজননকরা রানী সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে সক্ষম, যেখানে প্রচলিত বা সনাতন পদ্ধতিতে রানী ৬ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। বর্তমানে কৃত্রিম প্রজননকরা একটি রাণির আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় ২৪০০ টাকা বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে গবেষণার মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে এদেশীয় আবহাওয়া-উপযোগী রানী উৎপাদন করতে পারলে বাঁচবে সময় ও অর্থ। সমগ্র দৃষ্টিতে গ্রামের স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জন্য মৌমাছি পালন এখন একটি লাভজনক ক্ষেত্র। এ বিষয়ে বেকার ও দরিদ্র্যজনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই গ্রামীণ আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব।
সব কৃষক পর্যায়ে মৌপালনের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। সেই সঙ্গে আগ্রহী মৌচাষিদের আর্থিক সামর্থ্যও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। মাঠে থাকা মৌবাক্সে বিভিন্ন প্রকার শত্রু ও রোগের আক্রমণে মৌমাছি কলোনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সারাদেশে মধু ও মৌপণ্য পরিবহন হয়রানি, জটিলতা, স্থানীয় চক্র ইত্যাদি অতিক্রম করে বাজারজাত করতে কৃষককে হিমশিম খেতে হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।