অর্থনীতি ডেস্ক : আমদানি খরচ কমাতে অবশেষে বিশাল আকৃতির জাহাজ বন্দর চ্যানেলে প্রবেশের অনুমতি দিতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সব ধরনের যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই এই ঘোষণা দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান।
বর্তমানে বন্দরে আসা সাড়ে নয় মিটার গভীরতার প্রতিটি জাহাজ গড়ে দুই হাজার কন্টেইনার আনতে পারে। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রতিটি জাহাজে বহন করা যাবে তিন হাজারের বেশি কন্টেইনার।
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করছে বিশাল আকৃতির মাদার ভ্যাসেল।
নানা জটিলতার কারণে বন্দরের মূল জেটিতে ভেড়ার অনুমতি নেই তাদের। এতে একদিকে বাড়তি খরচ গুণতে হয় ও ঝুঁকি নিয়ে পণ্য খালাস করতে হয়। অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টি হলে কিংবা সতর্ক সংকেত জারি হলেই বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের কার্যক্রম। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এবার ১০ মিটার গভীরতা এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় বড় জাহাজ সরাসরি প্রধান জেটিতে আসার অনুমতি দিতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। মূলত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ায় এমন চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজ হ্যান্ডেল করছি। আমাদের একটা কনসালটেন্সি চলছে। দুই এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট পাব। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে আরও বড় দৈর্ঘ্যের জাহাজের জেটিতে আসতে পারবে।
বন্দরে আট মিটার থেকে সাড়ে আট মিটার গভীরতার জাহাজ আনার অনুমতি দিতে সময় লেগেছিল কয়েক দশক। আর সাড়ে আট থেকে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজের অনুমতি মিলতে যাচ্ছে মাত্র কয়েক বছরে। সাড়ে আট মিটার গভীরতার প্রতিটি জাহাজ ১১শ’ কন্টেইনার কিংবা ২২ হাজার মেট্রিক টন পর্যন্ত পণ্য বহন করতে পারে। তার বিপরীতে ১০ মিটার গভীর এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ বহন করতে পারবে ৩ হাজারের বেশি কন্টেইনার। ফলে আমদানি খরচ কমবে অন্তত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ জানান, বন্দরে বর্তমানে ১৯০ মিটার বড় জাহাজ আসে। এক্ষেত্রে যদি ২০০ মিটারের বড় বড় জাহাজ আনা সম্ভব হয়। তাহলে মাল পরিবহনে খরচ আরও অনেক কমে যাবে।
বন্দরের ২ থেকে ৮ নম্বর জেটিতে সাড়ে আট মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যায়। আর ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটিতে ভিড়তে পারে সাড়ে নয় মিটার গভীরতার জাহাজ। এর মধ্যে মাত্র ৬টি জেটিতে ভিড়তে পারে কন্টেইনারবাহী জাহাজ। বাকি জেটিগুলোতে বাল্ক পণ্যবাহী জাহাজ প্রবেশের অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ আনতে গেলে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের কোনো বিকল্প দেখছেন না বন্দর ব্যবহারকারীরা।
গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইউএস কন্টেইনার, ১১ কোটি ৭৭ লাখ মেট্রিক টন পণ্য বাল্ক পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে। আর এই বন্দরে পণ্য নিয়ে মোট জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ১৯৯টি। সূত্র : সময়নিউজ, জাগোনিউজ