শিমুল মাহমুদ : কোভিড ১৯ সুরক্ষায় দেশের ১৪ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে টিকাদান সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত সাড়ে ২৭ কোটি টিকা পাওয়া গেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১০ কোটির মতো টিকা হাতে আছে। আর টিকার জন্য এখন পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আর টার্গেটেড পিপলের ৮২ শতাংশের টিকা দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, করোনার টিকার ১০ কোটি প্রথম ডোজ, প্রায় ৭ কোটি দ্বিতীয় ডোজ এবং শিক্ষার্থীদের দেড় কোটির মতো টিকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে দেড় থেকে পৌনে ২ কোটি মানুষ এখনো টিকা নেননি। সবাইকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারা বিশ্বে লোকজনকে টিকা দেওয়ার কারণে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা। এসব থেকে ধরে নেওয়া যায় যে মহামারির সময় ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর বলেছেন, গত একশ বছরে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ভাইরাসের প্যানডেমিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সেসব মহামারি এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। সেই বিবেচনায় হয়তো বলা হচ্ছে যে এটাই হয়তো শেষ বছর। কিন্তু এখানে অন্য প্রশ্নও রয়েছে।
দুটো সম্ভাবনা আছে। আমরা অমিক্রনের যত মিউটেশন দেখছি সেটি আবার ততোই সংক্রমিত হচ্ছে। যখনই ভাইরাস ব্যাপক ট্রান্সমিশনে থাকে তখন ভাইরাসের আরো বেশি মিউটেশনের সম্ভাবনা থাকে। তখন হয়তো ভাইরাসটি দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
আবার শক্তিশালীও হতে পারে। একারণে প্যান্ডেমিক শেষ হয়ে যাচ্ছে কী না সেটা বলার জন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে এখনও কিন্তু সমানভাবে টিকা দেওয়া যায়নি। স্বাভাবিক সংক্রমণ থেকে যে এন্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় সেটা কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয় না। তবে যদি আমরা টিকার পরিমাণ বাড়াতে পারি, বিশ্বের অন্তত ৭০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারি, তখন পরিস্থিতি অন্যরকম হবে।
যুক্তরাজ্য শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি’র সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম বলেন, ধারনা করা হচ্ছে, ওমিক্রন ভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এত পৃথিবীর ৮০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়ে যাবে এবং ইমিউনিটি ডেভেলাপ করবে।
আর পরবর্তিতে যে ভাইরাসটা আসবে এতে সংক্রমিত হলেও মারাত্বক পর্যায়ে যাবো না। এ দিক থেকে বলা হয় মহামারির শেষ শুরু হচ্ছে ওমিক্রন।
বলা হচ্ছে এটা ‘প্যান্ডেমিক’ নয়, কোভিড থাকবে ‘এন্ডেমিক’ হিসেবে। তাই কোভিড থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যেস্ব পদ্ধতি রয়েছে এগুলো আমাদের অনুসরন করতেই হবে।
তিনি বলেন, সাধারন ফ্লু যেহেতু রয়ে গেছে সেহেতু কোভিডও থাকবে এবং কোভিডের সঙ্গেই বাঁচতে শিখতে হবে।