![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
সরকারের আর্থিক খাতের তথ্য-উপাত্ত এবং বাজেটের হিসাবে স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে : সিপিডি
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/uploads/2022/02/CPD-400x264.jpg)
সোহেল রহমান : সরকারের আর্থিক খাতের তথ্য-উপাত্ত এবং বাজেটের হিসাবে স্বচ্ছতা ও সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে। যথাসময়ে কোনো তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায় না। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় তা জানা যায় না। এছাড়া রাজস্ব আদায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন এবং সরকারের অর্থায়ন ও বাজেট ঘাটতির পরিসংখ্যান নিয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিভাগের হিসাবেও গরমিল রয়েছে। এক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এমতাবস্থায় সরকারের আর্থিক হিসাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তথ্য-উপাত্ত বা ডেটা উন্মুক্ত করা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর এক হোটেলে ‘চ্যালেঞ্জেস অব ইমপ্রুভিং ফিসক্যাল ডাটা ফর পলিসি মেকিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ’ (সিপিডি)। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংস্থার সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয় তার তথ্য জানা গেলেও প্রকৃত খরচ জানা যায় না। অডিট রিপোর্ট ঠিকমতো প্রকাশ হয় না। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আর্থিক তথ্য শুধুমাত্র দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার জন্য জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চাহিদা অনুযায়ী মানসম্মত আর্থিক তথ্যের সময়মতো ডেলিভারির বিরাজমান অভাব সচেতনতার অভাব, সক্ষমতা, টেকসইতার জন্য জরুরিতা এবং পদ্ধতি ও প্রয়োগের অনুপস্থিতি সহ বিভিন্ন উৎস থেকে উদ্ভূত হতে পারে। এ লক্ষ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন।
জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির অর্ধ-বার্ষিক হিসাব প্রকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এটা করা হলে আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং জিডিপির হিসাব নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দেয় তার অবসান ঘটবে।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ডেটা পাওয়া যায় না। এতে জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, ‘তথ্য-উপাত্ত একটি বড় ইস্যু এবং চ্যালেঞ্জও বটে। পর্যাপ্ত ডেটা না থাকলে কোনো কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। এর অভাবে বাজেট প্রণয়ন ব্যাহত হবে।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক সংসদের স্থায়ী কমিটি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বাজেটকে আরও স্বচ্ছ হতে হবে এবং বাজেট প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু বাজেট প্রণয়ন করলেই হবে না, এমপিদের দায?িত্ব হচ্ছে বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করা।’
আর্থিক খাতে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তের ঘাটতির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তথ্য-উপাত্ত হালনাগাদ না হলে, এবং সহজভাবে সরবরাহ না করা গেলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের সমস্যা হবে। এজন্য তথ্য-উপাত্ত কীভাবে সহজভাবে সরবরাহ করা যায় তা নিয়ে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
আইন ও বিচার সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘সরকারি আয়-ব্যয়ের ডেটা উন্মুক্ত না। এখানে যথেষ্ট অস্বচ্ছতার ঘাটতি আছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমার নির্বাচনী এলাকায় যত গরিব লোক আছে, বাস্তবে তার চেয়ে বেশি।গত সাড়ে তিন বছরে কেউ আমাকে বলেনি আপনার এলাকায় বাজেট কত, কত খরচ হলো।
পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘উন্নয়ন বেশি করতে চাইলে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ সহজ করতে হবে।’
সাবেক অতিরিক্ত সচিব রণজিৎ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আর্থিক খাতের প্রায় সর্বক্ষেত্রেই অটোমেশন হচ্ছে। এর ফলে আশা করা যাচ্ছে তথ্য সরবরাহ আরও সহজলভ্য হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক দিক হচ্ছে বাজেট সিস্টেমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এতে করে বাজেট আরও স্বচ্ছ হবে।’
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)