শোভন দত্ত : বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় ২০২২ সালে ৭ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৯৪তম। গত বছর এ অবস্থান ছিল ১০১তম। মহামারীর বছরে অনেক মৃত্যু আর দুর্দশার মধ্যেও কিছু সুখের খবর দিয়েছে ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট; জাতিসংঘের এ বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে সুখ বেড়েছে বাংলাদেশের মানুষের মনে।
২০মার্চ বিশ্ব সুখ দিবস সামনে রেখে শুক্রবার দশমবারের মত এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক-এসডিএসএন। তাতে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে সাত ধাপ।
২০১২ সাল থেকে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সামাজিক সুরক্ষা, কাঙ্ক্ষিত গড় আয়ু, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, মানবিকতা, দুর্নীতির ধারণা এবং সার্বিক দুর্দশা- এই সাত মানদ-ের ভিত্তিতে বিচার করে একটি দেশের মানুষ কতটা সুখে আছে, তা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। আর সূচকে একটি দেশের অবস্থান চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে ‘গ্যালপ ওয়ার্ল্ড পোল’ থেকে পাওয়া তথ্য।
সেই হিসেবে ১০ ভিত্তিক স্কেলে এবারের সূচকে বাংলাদেশের সুখের ঝুলিতে সংগ্রহ ৫ দশমিক ১৫৫ পয়েন্ট, বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে অবস্থান ৯৪ তম। আগের বছর ১০৪টি দেশের মধ্যে ৫ দশমিক ০২৫ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ছিল ১৪৯টি দেশের মধ্যে ১০১তম অবস্থানে।
সুখী দেশের এই তালিকায় গত পাঁচ বছর ধরেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী ফিনল্যান্ড। এ বছর দেশটির ঝুলিতে সংগ্রহ ৭ দশমিক ৮২১ পয়েন্ট। শীর্ষ পাঁচে পরের চারটি দেশ হল ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস।
সূচকে ২ দশমিক ৪০৪ পয়েন্ট নিয়ে এ তালিকার সবচেয়ে অসুখী দেশ আফগানিস্তান, মহামারীর মধ্যেই গতবছর যারা তালেবানি শাসনে ফিরেছে। পরের চারটি দেশ হল লেবানন, জিম্বাবুয়ে, রুয়ান্ডা ও বতসোয়ানা।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি সুখে আছে কেবল নেপাল, হিমালয়ের এ দেশের স্কোর ৫ দশমিক ৩৭৭। এছাড়া পাকিস্তান এ তালিকার ১২১ তম (স্কোর ৪ দশমিক ৫১৬), মিয়ানমার ১২৬ তম (স্কোর ৪ দশমিক ৩৯৪), শ্রীলঙ্কা ১২৭ তম (স্কোর ৪ দশমিক ৩৬২) এবং ভারত ১৩৬ তম (স্কোর ৩ দশমিক ৭৭৭) অবস্থানে রয়েছে।
এবারের প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক জন হেলিওয়েল বলছেন, মহামারীর মধ্যে উদারতার তিনটি ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে বিশ্বে। ২০২১ সালে দাতব্য কর্মকা-, অচেনা মানুষকে সহায়তা এবং স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকা- বেড়েছে মহামারীর আগের সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ।
আরও একটি ভালো খবর এসেছে এবারের প্রতিবেদনে। ২০২১ সালের প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছিল, মানুষের দুশ্চিন্তা আর মানসিক চাপ মহামারীর আগের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়েছিল। আর এবারের প্রতিবেদনে তা নেমে এসেছে ৪ শতাংশে।