শোভন দত্ত : পেট্রোবাংলা মিশ্রিত গ্যাসের পাইকারি ব্যায় (২০২২ সালে প্রতি ঘনমিটার) ১৫.৩০ টাকা পড়বে, এ কারণে ২০.৩৫ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বিইআরসি কারিগরি মূল্যায়ণ কমিটি মনে করছে এই ব্যায় দাঁড়াবে ১২.৪৭ টাকা। কারিগরি কমিটি মূল্যায়ন রিপোর্টে পেট্রোবাংলাকে অনুদান দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
বিইআরসির গণশুনানিতে এমন তথ্য তুলে ধরেন বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক পরিচালক (গ্যাস) দিদারুল আলম। বিয়াম মিলনায়তনে এই গণশুনানি শুরু হয়েছে।
সবশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে (২০১৯ সালে) পাইকারি দর প্রতি ঘনমিটার ১২.৬০ টাকা করা হয়। এরমধ্যে ইউনিট প্রতি ভতুকির দিয়ে ৯.৩৭ টাকায় বিক্রির নিদেশ দেয় বিইআরসি। পেট্রোবাংলা বলছে সরবরাহ চলতি বছরে সরবরাহ ব্যায় দাঁড়াবে ১৫.৩০ টাকা এ জন্য ভোক্তা পয়ায়ে ২০.৩৫ টাকা করার দাবী করেছে পেট্রোবাংলা। তবে কারিগরি কমিটি পেট্রোবাংলার তথ্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। তারা মনে করছে মিশ্রিত গ্যাসের সরবরাহ ব্যায় দাড়াবে ১২.৪৭ টাকা।
কারিগরি কমিটি তাদের রিপোর্টে দেখিয়েছেন স্পট মাকেট থেকে দৈনিক ৯৯.৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। যা মোট গ্যাসের মধ্যে প্রায় ৩শতাংশের মতো। বিদায়ী অথবছরে গ্যাসের মিশ্রিত ব্যায় ২.৪০ টাকা কমে ১০.১২ টাকায় নেমে এসেছে। আর এটা নিয়েই যতো আপত্তি জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন অন্যান্য উৎসের গ্যাসের মূল্য অপরিবর্তিত তখন ৩শতাংশ গ্যাসের দাম বেড়েছে জন্য অবিশ্বাস্য দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ভোক্তারা এই মুহুতে দাম না বাড়ানোর পক্ষে মতামত দিয়েছে।
ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, স্পর্ট মার্কেট থেকে আনা গ্যাসের দাম বেড়েছে ৫-৬ শতাংশ।
এ জন্য সব গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়াতে হয় এটা বিশ্বাসযোগ্য (নয়)! তারা গোঁজামিল দিয়ে হিসাব দেখাচ্ছে, এসব হিসাব বাস্তবসম্মত নয়। প্রয়োজন হলে ওই পরিমাণ এলএনজি আমদানি না করার পক্ষে আমরা। তবুও দাম বাড়ানো উচিত হবে না। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল তার স্বাগত বক্তব্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্ব প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।
বিতরণ কোম্পানিগুলো শিল্প কারখানায় ১১৭ ভাগ এবং বাসাবাড়িতে ১১৬ ভাগ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। তবে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ক্ষেত্রে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে। এবার মূল্য নির্ধারণে অবিবেচক হবে না।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে গণশুনানি শুরু হয়েছে। আগামী চারদিন শুনানি চলবে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের প্রস্তাবনা উত্থাপন করবে। আমাদের বিচারক টিম থাকবে। চুলচেরা বিশ্লেষণের পরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমরা অমানবিক হবো না।
গণশুনানিতে বিইআরসি, পেট্রোবাংলা ও জিটিসিএলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং গণশুনানিতে আগ্রহী বক্তাদের মধ্য থেকে বিইআরসির আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত আছেন।