রুবল-রুপিতে ব্যবসা করবে ভারত-রাশিয়া
রাশিদ রিয়াজ : মার্কিন ডলারের পরিবর্তে নিজেদের মুদ্রায় বাণিজ্যিক লেনদেন করবে ভারত ও রাশিয়া। চলতি সপ্তাহের মধ্যে রুশ রুবল ও ভারতীয় রুপির মাধ্যমে দুটি দেশে নিজেদের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির ব্যয় মেটাবে। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের (এফআইইও) সভাপতি এ সাক্তিভেল সিএনবিসি’কে এ তথ্য জানান। ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারে দেশটির সঙ্গে বাণিজিক লেনদেনে সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বিকল্প এই পদ্ধতি অনুসরণ করবে দুটি দেশ। আরটি
রাশিয়ার কাছ থেকে ডলারের পরিবর্তে বাণিজ্যিক লেনদেনে প্রস্তাব পাওয়ার পর ভারতের ৫টি ব্যাংক এর প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু করে। এসব ব্যাংকের কর্মকর্তারা রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভারতের রফতানিকারকরা কিভাবে বিনা বাধায় দেশেিটতে পণ্য রফতানি করতে পারে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত এরই মধ্যে ভারত, রাশিয়া থেকে তেল ও অন্যান্য পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে এবং এতে দেশটির অর্থনীতি লাভবান হচ্ছে।
রাশিয়ায় ভারত থেকে কৃষি পণ্য ও ওষুধ রফতানি হয়ে থাকে। তবে রাশিয়া থেকে তেল কেনার ব্যাপারে দুবার বিষয়টি নিয়ে চিন্তার কথা বলেছিল যুক্তরাষ্ট। তবে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের মত ভারত ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের সমালোচনা করেনি। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় ভোট দানেও বিরত ছিল দিল্লি। গত বছর ভারত রাশিয়ায় ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। এসব পণ্যের অধিকাংশই হচ্ছে ওষুধ, চা ও কফি। রাশিয়া থেকে একই বছর ভারত আমদানি করেছে ৬.৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। রুশ অস্ত্র, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, খনিজ, সার, ধাতব, হীরাসহ বিভিন্ন মূল্যবান পাথর আমদানি করেছে ভারত। এছাড়া ভারতের তেল পরিশোধানাগারগুলো রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বৃদ্ধি করছে। রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে সার তৈরির কাঁচামাল আমদানি করবে ভারত।
এদিকে রাশিয়া বলেছে, বিনামূল্যে ইউরোপের দেশগুলোকে গ্যাস সরবরাহ করা হবে না। ইউক্রেন ইস্যুতে যখন পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক দিন দিন অবনতি হচ্ছে এবং তেল-গ্যাসের দাম পরিশোধের পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে তখন মস্কো এই ঘোষণা দিল। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটি পরিষ্কার যে, আমরা ইউরোপকে বিনামূল্যে গ্যাস দেবো না।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে আমাদের যে পরিস্থিতি তাতে আমরা কাউকে বিনামূল্যে সেবা দিতে পারব না।” পেসকভ আরো বলেন, গ্যাস রপ্তানির অর্থ কিভাবে রুবলে গ্রহণ করা যায় তা ঠিক করতে কাজ চলছে।
ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা দ্রুত মস্কোর ওপর ব্যাপকভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে রাশিয়া আর্থিকভাবে চাপের মুখে পড়ে। জবাবে রাশিয়া বলেছে, তার কাছ থেকে তেল ও গ্যাস নিতে হলে রুশ মুদ্রা রুবলে দাম পরিশোধ করতে হবে। ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর চরমভাবে নির্ভরশীল। কিন্তু ইউরোপের দেশগুলো তা মানতে নারাজ। গত শুক্রবার মস্কো বলেছে, অবন্ধুসুলভ দেশগুলোকে তেল ও গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করতে হবে।