ব্যয় হবে ৬৮৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা বারৈয়ারহাট-হেয়াঁকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ২৯ শতাংশ ব্যয় বাড়ছে
সোহেল রহমান : প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রায় ২৯ শতাংশ অধিক ব্যয়ে বারৈয়ারহাট-হেয়াঁকো-রামগড় (আর-১৫১ ও আর-১৫২) সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
ভারতীয় তৃতীয় ক্রেডিট লাইনের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান অশোকা বিল্ডকন লিমিটেড। এজন্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটিকে দিতে হবে ৮ কোটি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩২৪ ডলার।
বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৮৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এছাড়া আমদানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক, ট্যাক্স ও ভ্যাট ইত্যাদি বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। বুধবার অনুষ্ঠেয় ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান সড়কটির প্রস্থ সাড়ে ৫ মিটার। এটি ১১ দশমিক ৩০ মিটারে উন্নীত করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরেরসরাই উপজেলার বারৈয়ারহাট থেকে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়কসহ ২৩টি কালভার্ট ও ৯টি সেতু রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর-এর মতে, ‘বারৈয়ারহাট-হেয়াঁকো-রামগড় (আর-১৫১ ও আর-১৫২) সড়ক দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক। মহাসড়ক নেটওয়ার্কে এটি চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের সীতাকুন্ড সড়ক উপ-বিভাগের আওতাধীন। আলোচ্য আঞ্চলিক মহাসড়ক দুটির উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হলে সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’-এর লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
অন্যদিকে সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে চার লেন বিশিষ্ট ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ক নির্মাণ; ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক উন্নয়ন/পুনর্বাসন; ৭ হাজার মিটার দীর্ঘ ফ্লাই-ওভার/ওভার পাস নির্মাণ; ১৪ হাজার ৮০০ মিটার দীর্ঘ সেতু/কালভার্ট নির্মাণ এবং ৬ হাজার ৮০০ মিটার সেতু/কালভার্ট পুনঃনির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘বারৈয়ারহাট-হেয়াঁকো-রামগড় (আর-১৫১ ও আর-১৫২) সড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে। চুক্তি অনুযায়ী, নির্মাণ কাজের ৬৫ শতাংশ মালামাল ও সার্ভিসের উৎস হবে ভারত এবং অবশিষ্ট ৩৫ শতাংশ মালামাল ও সার্ভিসের উৎস হবে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সংক্ষিপ্ত দরদাতা প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয় এবং চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সবকটি প্রতিষ্ঠানই ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক এবং বাংলাদেশের দরপত্র ও কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে ‘অশোকা বিল্ডকন লিমিটেড’ মনোনীত হলেও দেখা যায় যে, প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবিত দর প্রকল্পের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১৫২ কোটি ৭২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা বেশি।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত দর হচ্ছে ৫৩০ কোটি ৯৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা এবং ডিপিপি- তে বরাদ্দ রয়েছে ৫৭৪ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এমতাবস্থায়, ডিপিপি সংশোধন করা হবে বলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র জানায়।
দরপত্রে অংশ নেয়া অপর তিনটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ছিলÑ ‘লারসেন অ্যান্ড টাউব্রো লিমিটেড’; ‘ইরকন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’ ও ‘এফকন্স ইনফ্রাসট্রাকচার লিমিটেড’।