দেড় মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার টানা দরপতন আর লেনদেন খরা থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বাড়লেও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) পতন হয়েছে। ডিএসইতে সূচকের সাথে টাকার পরিমাণ লেনদেনও বেড়েছে। তবে কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর। এদিকে সিএসইতে সূচকের সাথে কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, লেনদেন বৃদ্ধিটাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন। সংশ্লিষ্টরা বলেন, টানা পতন থেকে বেরিয়ে সূচকের যেমন ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলছে, তেমনি বেড়েছে লেনদেনের গতিও এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক।
গতকাল বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্যে সূচক ঊর্ধ্বমুখী রাখতে বড় ভূমিকা পালন করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানি এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যান্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমলেও, এই দুই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতেই সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকে শেষ হয়েছে লেনদেন।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা অব্যাহত থাকে। এরপর সূচকের বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। আর বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে টানা নিচের দিকে নামতে থাকে সূচক। এতে এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৩ পয়েন্ট কমে যায়।
এ পরিস্থিতিতে আবার পতনের আশঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তবে লেনদেনের শেষ ৮ মিনিটে বড় ধরনের চমক দেখা যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম এই সময়ে যায় বেড়ে। এমনকি দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমাও স্পর্শ করে একাধিক কোম্পানি। এতেই সবকটি মূল্যসূচক বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৩টির। আর ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে আর্থিক খাতের ১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ৪টির এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১০টির। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩১৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৮০১ কোটি ৩২ লাখ টাকার। যা আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ৩১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২৫.৭০ পয়েন্ট বা ০.১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৭৪৯.৬৫ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১০০টির, কমেছে ১৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির দর। সিএসইতে ৬১ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।