ইরান নিষেধাজ্ঞার আগের পর্যায়ে তেল উৎপাদন করছে
রাশিদ রিয়াজ : ইরনের বিরুদ্ধে মার্কিন বিধিনিষেধ এখনও বহাল থাকা সত্ত্বেও দেশটি এখন দিনে তেল উৎপাদন করছে ৩.৮ মিলিয়ন ব্যারেল। দেশটির ইরানের তেলমন্ত্রী জাভেদ ওজির মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে। ২০১৮ সালে কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করার আগে ইরানের তেলের উৎপাদন অর্জিত স্তরে ফিরে এসেছে দেশটি। আরটি
দেশটি অপরিশোধিত তেল, পেট্রোকেমিক্যাল এবং পরিশোধিত জ্বালানির রপ্তানিও বাড়িয়েছে, তেহরানের সাথে ব্যবসা করে এমন দেশগুলিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ওয়াশিংটনের হুমকি সত্ত্বেও নির্ভরযোগ্য গ্রাহক খুঁজে পেয়েছে ইরান। এক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের পরিবর্তে নিজস্ব মুদ্রায় তেলের মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয়েছে দেশটি। একই সঙ্গে ইরান অনশোর এবং অফশোর তেলক্ষেত্রে কার্যকর উৎপাদন ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে – নতুন কূপ খনন, কূপ মেরামত, পুননির্মাণ ও আধুনিকীকরণ সুবিধা এবং তেল সংগ্রহ কেন্দ্র বৃদ্ধির ফলে বর্তমান তেল উৎপাদন ক্ষমতা নিষেধাজ্ঞার আগের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। ইরানের তেলমন্ত্রী বলেন, তেল উৎপাদনের কর্মক্ষমতায় কোনো সমস্যা নেই। ইরানের তেলমন্ত্রীর এসব দাবির পর কয়েক সপ্তাহ পরে এই খবর আসে যে দেশটির বিরুদ্ধে ‘কঠিন নিষেধাজ্ঞা’ সত্ত্বেও এবং ‘ভিয়েনা আলোচনার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা না করে’ রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।
ইরানের সঙ্গে পারমানবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন যে চুক্তিটি ইরানের শাসনকে সমৃদ্ধ করেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মার্কিন মিত্ররা মূলত ইরান থেকে তাদের তেল আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়া ইরান থেকে নিষেধাজ্ঞার পূর্বে প্রতিদিন ৬ লাখ তেল কিনত।
২০২০ সালে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান দিনে ২ থেকে ৩ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করত। ইরানের তেল ভর্তি জাহাজ বেশ কয়েকবার আটকের ঘটনা ঘটে এবং এধরনের উদ্যোগ দেশটির পক্ষ থেকে ভ-ুল করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ইরান তার তেল উৎপাদন ৫.৭ মিলিয়ন ব্যারেলে উন্নীত করার বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নিয়ে আগাচ্ছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানের তেল শিল্প ইতিমধ্যেই বহুলাংশে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ইরানে ৮৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল সমুদ্রে এবং উপকূলে মজুদ রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সৌদি আরব এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশগুলিকে তেল উৎপাদন বৃদ্ধির আহবান সত্ত্বেও তা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ইউক্রেন সংঘাতের মধ্যে রাশিয়ার তেল রফতানির ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে শুরু করেছে এবং ইরানের তেলের চাহিদাও সৃষ্টি হয়েছে।