শিমুল মাহমুদ : করোনা সংক্রমণ কমে আশায় এবার রমজানের আগেই জমে উঠেছে ঈদের বাজার। ক্রেতাদের অভিযোগ, মার্কেটে আসা নতুন পোশাকের দামের সঙ্গে নেই মানের সামঞ্জস্য। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, সব কিছুর দাম যখন বাড়তি, তখন পোশাকের দাম বৃদ্ধিও স্বাভাবিকই।
রাজধানীর নিউমার্কেট, মৌচাক মার্কেট, ফরচুন শপিং মল, ফার্মভিউ সুপার মাকের্ট ও রাজধানী মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, প্রায় দোকানই ক্রেতাশূন্য আবার কোথাও মানুষের ভীড়।
স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে ফরচুন শপিং মলের ঈদের কেনাকাটার করতে আসা মতিউর রহমান বলেন, শিশুদের পোশাকের দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। সেই তুলনায় কাপড়ের মান নেই। বাজেটে হিমশিম খাচ্ছি।
তিনি বললেন, সংসার চালাতে গিয়েই তো হিমশিম খাচ্ছি। রোজায় এমনিতেই বাড়তি খরচ হচ্ছে, কয়েকদিন পর ঈদ, অনেক কিছুই করতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সামর্থ্য কই?
এখানকার সৈকত ফ্যাশনের মালিক মো. আশরাফুজ্জামান রাজিব জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পোশাকের সরবরাহ কম। প্রতি গজে ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা করে বেড়েছে কাপড়ে দাম। একই সঙ্গে সুতার দাম বার বার বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতীয় ও চায়না সুতা আমদানী না থাকায় দাম বেড়েছে।
নিউমার্কেট এলাকায় পোশাক কিনতে আসা মধ্যবয়সী নারী কাসপিয়া হামিদ বলেন, নতুন ডিজাইনের কোন পোশাক আসেনি এখনো। কিন্তু এইবার কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।
মানুষের আয় কমে যাওয়া ও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কী না জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এই পরিস্থিতির কারণে মানুষ অস্বস্তিতে আছে সত্য, তবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে। সেটা না হলে এবার আগে থেকে শপিং মলে ভিড় হবে কেন? আমি ঢাকার বাইরে গিয়েছি সেখানেও কিন্তু এবারের ঈদ প্রস্তুতি ভালো। আমার মনে হয় যারা ঈদে কেনা কাটা করেন তারা করবেন। সেই দিক দিয়ে সমস্যা হবে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এ বছর বিক্রি হবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, এবার করোনার বিধিনিষেধ না থাকায় ঈদের অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। সাধারণ মানুষের অবস্থা যাই হোক না কেন যারা বিদেশে শপিং করতে যেতেন তারা যাবেন। যারা ভোগ করতেন তারা করছেন। এই রমজানে ইফতার সেহেরির বিলাসিতা হচ্ছে। তাই ঈদ অর্থনীতি চাঙা হলেও বৈষম্য থেকেই যাবে।