
ভারতে বিদেশি মুদ্রা আইন লঙ্ঘনে বাজেয়াপ্ত শাওমির ব্যাংক হিসাব

রাশিদ রিয়াজ : চীনা মোবাইল নির্মাতা কোম্পানি শাওমি বিদেশী মুদ্রা আইন লঙ্ঘন করেছিল। তাই তাদের ৫৫৫১ কোটি রুপির তহবিল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট (ইডি)। দি ওয়াল
ইডি-র অভিযোগ, শাওমি ইন্ডিয়া তিনটি বিদেশি কোম্পানির অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছে। তার মধ্যে একটি শাওমিরই মালিকানাধীন সংস্থা। যে অর্থ পাঠানো হয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় তার পরিমাণ ৫৫৫১.২৭ কোটি রুপি।
এছাড়া আরও দু’টি মার্কিন সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও অর্থ পাঠিয়েছে শাওমি ইন্ডিয়া। তার ফলে বাস্তবে লাভবান হয়েছে শাওমি ইন্ডিয়ার পেরেন্ট কোম্পানি। সংস্থার দাবি, রয়ালটি হিসাবে তিনটি সংস্থাকে অর্থ দেওয়া হয়েছে। ইডি-র বক্তব্য, শাওমি ভারতীয় নির্মাতাদের থেকে ম্যানুফ্যাকচারড মোবাইল সেট ও অন্যান্য পণ্য কেনে। সেক্ষেত্রে তারা বিদেশী কোম্পানিকে রয়ালটি বাবদ টাকা দেবে কেন?
ইডি-র বক্তব্য, শাওমি ইন্ডিয়া রয়ালটির নাম করে বিদেশী সংস্থার অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠাচ্ছে। তারা ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (ফেমা)-র চার নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছে। বিদেশে অর্থ পাঠানোর জন্য তারা ব্যাঙ্কগুলিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য দিয়েছে। গত মার্চ ও এপ্রিলে শাওমি গ্রুপের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট মনু কুমার জৈনকে জেরা করে ইডি। তার বিবৃতিও রেকর্ড করা হয়।
এরপরে শাওমি কর্নাটক হাইকোর্টে অভিযোগ করে, তাদের প্রথম সারির এক্সিকিউটিভদের মারধর করার ভয় দেখানো হয়েছে। চাপ দিয়ে তাদের থেকে বিবৃতি আদায় করা হয়েছে। ইডি ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। তারা জানায়, গত ১৩ এপ্রিল, ১৪ এপ্রিল, ২১ এপ্রিল ও ২৬ এপ্রিল মনু কুমার জৈনের বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছিল। শাওমি ইন্ডিয়ার চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার সমীর বি এস রাওয়ের বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছে ছয়বার।
২০১০ সালে বেজিং-এ শাওমি কর্পোরেশন সংস্থার জন্ম হয়। তার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ধনকুবের লেই জুন। ওই সংস্থা মোবাইল ফোন বাদে ইলেকট্রনিক্সের নানা পণ্য এবং বাড়িতে ব্যবহারের নানা যন্ত্রপাতি তৈরি করে। শাওমি বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল নির্মাতা সংস্থা। প্রথম স্থানে আছে স্যামসং। বিশ্ববিখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, স্মার্টফোনে আড়ি পাতে শাওমি। কোনও ব্যক্তি শাওমির স্মার্টফোনে যে ওয়েব সাইটগুলি দেখেন, তার ওপরে নজর রাখে ওই সংস্থা। সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলি পাঠিয়ে দেওয়া হয় আলিবাবা নামে অপর এক চীনা কোম্পানির কাছে।
