পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন কমেছে ১০ শতাংশ
মো. আখতারুজ্জামান : তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর দিয়েছে সরকার। দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা এখন থেকে ২০ শতাংশ স্থানীয় মূল্য সংযোজন করে পোশাক তৈরি করে রপ্তানি করলেই ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা বা প্রণোদনা পাবেন। এতদিন ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্থানীয় মূল্য সংযোজন করলে এই সুবিধা পাওয়া যেত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে পোশাক তৈরি কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং জাহাজ ভাড়া বাড়ার কারণে আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। এর ফলে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের হার রপ্তানি মূল্যের বিপরীতে কমে এসেছে।
বস্ত্র খাতে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা পাওয়ার শর্ত শিথিল করে সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বস্ত্রখাতে বিদ্যমান হারে রপ্তানি নগদ সহায়তা প্রদানে স্থানীয় মূল্য সংযোজন ন্যূনতম ২০ শতাংশ প্রযোজ্য হবে। জাহাজিকৃত রপ্তানি চালানের বিপরীতে দাখিল করা অনিষ্পন্ন আবেদনগুলোসহ এ সার্কুলার জারির তারিখ থেকে পরবর্তী সময়ে দাখিলযোগ্য আবেদনের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।
এতোদিন নগদ সহায়তা পাওয়ার জন্য ১০০ টাকার পণ্য আমদানি করে এর সঙ্গে ন্যূনতম ৩০ টাকার স্থানীয় পণ্য সংযোজন করে রপ্তানি করতে হতো। এখন তা কমিয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে স্থানীয় মূল্য সংযোজন হার ৩০ শতাংশ ছিল এখন ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এ সুবিধার আওতায় পোশাক রপ্তানিকারকরা ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পেয়ে থাকেন।
নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতে বলেন, আমরা বেশ কিছুদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলাম। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে পণ্য উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে জাহাজ ভাড়া আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এসব কারণে করোনার প্রভাব সাভাবিক হওয়ার পরে যে হারে রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়র কথা ছিলো সেই হারে হয়নি। সরকারের এই সিদ্ধাতের ফলে সার্বিক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ৩৫ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার বা ৮১ দশমিক ৮১ দশমিক ৫৯ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এই দশ মাসে সার্বিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।