সোহেল রহমান : দেশের আটটি বিভাগে মৌজা ও প্লট ভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮টি প্রস্তাবসহ ১৭টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে নসরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সতেরটি প্রস্তাবে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৩৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপত্বি করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ-এর অতিরিক্ত সচিব মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের জানান, দেশের আটটি বিভাগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘মৌজা ও প্লট ভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্প’ (সাব প্যাকেজ নং-১)-এর আওতায় মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করা হবে। এ লক্ষ্যে বিভাগওয়ারি ৮টি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর বিভাগে ১৩ হাজার ৩০৪টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১২ কোটি ৯৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা। প্রস্তাবনা : ৮
রাজশাহী বিভাগে ১৭ হাজার ৬৪১টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১৭ কোটি ১ লাখ টাকা।

ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ হাজার ৮৯৮টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে যৌথভাবে দেশ উপদেশ লিমিটেড ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সিলেট বিভাগে ১০ হাজার ২০৪টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে যৌথভাবে ডাটা এক্সপার্টস প্রাইভেট লিমিটেড ও মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্টস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। ঢাকা বিভাগে ১৮ হাজার ৭৭৯টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে যৌথভাবে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এবং সিনেসিস আইটি লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১৭ কোটি ৮০ লাখ ১১ হাজার টাকা।

খুলনা বিভাগে ৪২ হাজার ১৭১টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ২৭ কোটি ৯৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা। বরিশাল বিভাগে ৮ হাজার ৭৯৩টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে যৌথভাবে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এবং সিনেসিস আইটি লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ১২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ হাজার ৬২২টি মৌজা ম্যাপ শীট ডিজিটালাইজ করবে যৌথভাবে বেটস কনসালটিং সার্ভিসেস লিমিটেড ও মেগাটেক জিএনবিডি। এতে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক সেবা ক্রয়ের দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সারা দেশের স্যাটেলাইট ইমেজ সংগ্রহ এবং ইমেজ ক্লাসিফিকেশন (ভূমির ব্যবহার) ক্রয় কাজের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস। এতে ব্যয় হবে ৬৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। অন্যটি হচ্ছে, ডেভেলপমেন্ট অব ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফর জিআইএস ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইটস ভিজ্যুয়ালাইজেশন কাজের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে যৌথভাবে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এবং সিনেসিস আইটি লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক চট্টগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড-এর জন্য ২৫ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি সরবরাহ করবে মেসার্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনপুট। এতে ব্যয় হবে ৮১ কোটি ৭৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
বিসিআইসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
বিসিআইসি কর্তৃক কাফকো থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২২৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে টেবিলে উপস্থাপিত দুটি প্রস্তাবের একটিতে ৩৪৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার এবং তিউনিশিয়া থেকে ২১৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, এছাড়া বৈঠকে দুটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে চরবাড়িয়া এলাকা রক্ষা প্রকল্পের (প্যাকেজ নং-বিএসএল-০১) পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন বাবদ ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয় হ্রাস এবং সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প : জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক চারলেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৪৯ কোটি ৫৯ লাখ ৭৪ হাজার ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।