রপ্তানীর বিপরীতে নগদ সহায়তার উপরে আয়কর না নেয়ার দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের
মো. আখতারুজ্জামান : রপ্তানীমুখী সকল শিল্পের জন্য, বস্ত্রখাত, নীট ও টেরিটাওয়েলখাত, চামড়া ও পাদুকাশিল্প, সাইকেল, মৎস্য, ফ্রোজেন ফুড, রপ্তানীর বিপরীতে প্রদত্ত নগদ সহায়তার উপরে আয়কর কর্তনের হার ০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি করেছে রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষ্যে সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
ইএবি’র সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধাবস্থা এবং ডলারের মুল্যবৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে সকল আমদানী-রপ্তানী পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ এরও অধিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। যা সরাসরি রপ্তানী সংশ্লিষ্ট সকল খাতের উপর সরাসরি আঘাত বলে মনে করি। পোশাক শিল্পসহ সকল রপ্তানীখাত বর্তমানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাপের কারণে এক নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বস্ত্রখাত, নীট ও টেরিটাওয়েল খাত, চামড়া ও পাদুকাশিল্প, সাইকেল, মৎস্য, ফ্রোজেন ফুডসহ সকল রপ্তাণীমুখী শিল্পের জন্য একই নীতিমালা প্রনয়ন সময়ের দাবী রাখে। পোশাক খাতসহ সকল রপ্তানিমুখী শিল্পের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক করা এবং সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেছে সংগঠনটি।
রপ্তানীমুখী শিল্পের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল থার্মোস্ট্যাট ডিহিউমিডিফায়ার যন্ত্রটি শুল্কমুক্ত হারে আমদানীর অনুমোদনের দাবি করা হয়।
রপ্তানীমুখী সকল শিল্পের জন্য বিশেষ করে বস্ত্রখাত, নীট ও টেরিটাওয়েল খাত, চামড়া ও পাদুকাশিল্প, সাইকেল, মৎস্য, ফ্রোজেন ফুড, রপ্তানীর জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ এবং গ্রিন কারখানার জন্য ১০ শতাংশ আগামী পাঁচ বছর বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে।
রপ্তানীমুখী প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবহারিত লে-আউট অনুযায়ী অগ্নী- নির্বাপন উপকরন রেয়াতি হারে একবারই আমাদানি করা যায়। প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিকবার রেয়াতি হারে আমদানীর অনুমোদন। সর্বপরি বর্তমান অবস্থায় অগ্নী-নির্বাপন উপকরন আমদানী শুল্কমুক্ত রাখা যৌক্তিক বলে মনে করেন তারা।
রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানে চলমান যন্ত্রপাতির জন্য ব্যবহৃত প্রয়োজন অনুযায়ী যন্ত্রাংশ রেয়াতি হারে অর্থাৎ মূল যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য রেয়াতি হার অনুমোদন; রপ্তানীমুখী শিল্পের জন্য রপ্তানী সংশ্লিষ্ট স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত পণ্য ও সেবার ভ্যাট মওকুফ করার দাবি করা হয়। রপ্তানীমুখী শিল্পে স্থাপতি ইটিপি ব্যবহারিত আমদানীকৃত রাসায়নিকের শুল্ক ও মূসক ০ শতাংশ করাসহ বেশ কিছু দাবি করে সংগঠনটি।
মাংস প্রক্রিয়াজাত শিল্পে উৎসাহিত করার জন্য প্রক্রিয়াজাত মাংসের উপর ভ্যাট অব্যাহতি করার দাবি করা হয়।
মাংস প্রক্রিয়াজাত শিল্পে উচ্চ বিনিয়োগ প্রয়োজন হওয়ায়, লাভজনক হওয়ার যাত্রাটা দীর্ঘমেয়াদী। ভবিষ্যত সম্ভাবনা বিবেচনায় এই শিল্পকে আগামী ২০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা প্রদানে এবং এআইটি অব্যহতির আবেদন করা হয়। এই শিল্পের প্রানস্পন্দন গ্রামীণ কৃষক। সরকারের নানাবিধ প্রনোদনায় ব্যাপক সংখ্যক গ্রামীন যুবক এবং নারী সমাজ প্রাণিসম্পদ লালন পালনে জড়িত আছে। আমাদের শিল্পগুলো গ্রামীন জনপদে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারনে বাজার সংযোজন বাড়ায় তাদের উদ্দীপনা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। কিন্তু বিশেষ কর অব্যাহতি সুবিধাপ্রাপ্ত আমদানীকৃত মহিষের মাংষ একটি বিশেষ ঝুকি হয়ে দাড়িয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী যা প্রাণিজ আমিষের সরবরাহকে বিপন্ন করতে পারে। দারিদ্র উদ্যোগী গ্রামীন উদ্যোক্তাদের যথাযথ প্রনোদনা দেওয়ার এই ধরনের বিশেষ কর অব্যাহতির রহিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এই ব্যবসায়ী নেতারা।