শেয়ারবাজারে সূচক কমলেও ডিএসইর লেনদেন হাজার কোটি টাকা
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার টানা সাত কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সোমবার কিছুটা মূল্য সংশোধনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন মূল্য সংশোধন হলেও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর লেনদেন প্রায় হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
এর আগে ২৫ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত টানা সাত কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। সাত কার্যদিবসের এ উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ৩০২ পয়েন্ট। এ পরিস্থিতিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম ৫০ মিনিট সূচকের উত্থান প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এতে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে এরপর শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে গেলে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে কমতে থাকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। আর লেনদেনের শেষদিকে এসে বিক্রির চাপ আরও বেড়ে গেলে সূচক ঋণাত্মক হয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়। অবশ্য এ পরিস্থিতিতেও আগের দিনের মতো দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বিমা কোম্পানিগুলো।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৫৩টি বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৬টিই দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়। বিপরীতে দাম কমেছে ৫টির। আর একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে এবং একটি লেনদেন হয়নি। অপরদিকে, সব খাত মিলে ডিএসইতে ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৯টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও বাজারটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৭৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৯৫০ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অংকে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ২৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, বিডি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, লাফার্জহোলসিম, ব্র্যাক ব্যাংক, বিএসসি, জেএমআই হসপিটাল, স্যালভো কেমিক্যাল ও বিডি কম।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- পাইনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, প্রগতী ইন্স্যুরেন্স ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ট্রাস্ট ব্যাংক, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার, গোল্ডেন হারভেস্ট, জেনেক্স ইনফোসিস, পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, মনোস্পুল পেপার, সিলকো ফার্মা, আইটি কনসালটেন্ট ও অ্যাম্বী ফার্মা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৫৪ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৩১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।