ইউনিয়নের ধর্মঘট : লোডশেডিংয়ের কবলে শ্রীলঙ্কা
সালেহ্ বিপ্লব : সরকারের আরোপ করা নতুন নিয়মকানুনের বিরোধিতা করে ধর্মঘট শুরু করেছে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউনিয়ন। আর এর জেরে বৃহস্পতিবার দেশটির বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খেতে থাকা দেশটিতে এটি আরেক বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সেলন ইলেক্ট্রিসিটি বোর্ড (সিইবি) শ্রীলঙ্কার মূল বিদ্যুৎ কোম্পানি। এর এক হাজার একশ’ প্রকৌশলীর মধ্যে নয়শ’ জনই মধ্যরাত থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন। এতে আটটি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। এই কেন্দ্রগুলো থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে।
শ্রীলঙ্কার দুই কোটি ২০ লাখ জনগোষ্ঠী ইতোমধ্যেই মারাত্মক আর্থিক সংকট মোকাবিল করছে। সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই সংকটে জ্বালানি, ওষুধ এবং অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মারাত্মক সংকটে পড়েছে দেশটির মানুষ। মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতির চাপে নাজেহাল হয়ে পড়েছে মানুষ।
সিইবি এর প্রকৌশলী ইউনিয়নের ধর্মঘট ঠেকাতে বুধবার রাতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে বিদ্যুৎ সরবরাহকে জরুরি সেবা ঘোষণা করেন। আইনি এই নির্দেশনার ফলে প্রকৌশলীরা কর্মস্থলে হাজির থাকতে বাধ্য।
ইউনিয়নের জয়েন্ট সেক্রেটারি এরাঙ্গা কুদায়েভা বলেন, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে গত রাতে ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টকে ডেকে পাঠান এবং পুরো গ্রিড বিপর্যয় ঠেকানোর আহ্বান জানান। সেকারণে আমরা হাসপাতাল এবং অন্য জরুরি সেবায় বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে কাজ করছি। কিন্তু ধর্মঘটন চলবে।
ইউনিয়নটি দেশের বিদ্যুৎ খাত নিয়ন্ত্রণকারী আইন সংশোধনের সরকারি পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে। এর মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রতিযোগিতামূলক বিডিংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা অপসারণ।
কিন্তু সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে দেশের বিদ্যুতের সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে ধরে নিয়ে চাপ দিয়ে প্রকল্পগুলোর দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের জন্য সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ তদারকি প্রতিষ্ঠান পাবলিক ইউটিলিটিস কমিশনের চেয়ারম্যান জানাকা রতœায়েকে বলেন, পানি বিদ্যুৎ সরবরাহকৃত অঞ্চলে লোডশেডিং চলছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোর কিছু এলাকাও রয়েছে।
রতœায়েকে বলেন, ‘আমরা পরিষেবাগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য কাজ করছি এবং জনগণের অসুবিধা কমাতে ইউনিয়নগুলির সাথে কথা বলবো’?
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা এই বছরের শুরুতে দীর্ঘ বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে পঙ্গু হয়ে যায়। কারণ তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি করতে পারেনি। পরে বর্ষায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকে শক্তিশালী হলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। রয়টার্স