বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে করোনায় চাকরিচ্যুত ব্যাংকারদের মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনায় চাকরি হারানো ব্যাংকাররা রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন করেছেন। বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে চাকরি হারানো অর্ধ শতাধিক কর্মী অংশ নেন। এ সময় তারা চাকরি ফেরত চেয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা জানান, সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই করোনাকালে কয়েক হাজার ব্যাংকারকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এমনকি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায়ও কিছুসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকে জোরপূর্বক পদত্যাগের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তেও কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের সেপ্টেম্বরে চাকরিচ্যুত ব্যাংকারদের চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ জারি করে। ওই নির্দেশনার পর চাকরিচ্যুত অনেক ব্যাংকার চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করেন। কিন্তু ব্যাংকগুলো চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহালে কার্যকর তেমন কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।
এ কারণে চাকরিচ্যুত ব্যাংকাররা আর্থিক ও সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এ অবস্থায় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ব্যাংকাররা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন জানান। এ সময় তারা এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মানববন্ধনে চাকরীচ্যুত এক ব্যাংকের কর্মকর্তা শাখায়াত বলেন, আমাকে সম্পন্ন অন্যায়ভাবে চাকরীচ্যুত করা হয়েছিল। এইচআর ডিপার্টমেন্টকে আমার অপরাধের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। আমি আমার পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাকালীন সময়ে কাজ করার প্রতিদান কি এটা হতে পারে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া এক কর্মী জানান, কোন ধরনের অভিযোগ ছাড়াই এইচআর থেকে ডেকে নিয়ে আমাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোথাও যেতে পারিনি, নতুন করে কোথাও চাকরি পাইনি। বিষয়টা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজর এলে, চাকরিতে পুর্নবহালের নির্দেশ দেয়া হয়। আমি পুর্নবহালের আবেদন করেছি এখন পর্যন্ত আমাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়নি। মানব বন্ধনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২০২০ সনের মার্চে যখন বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যখন করোনার অভূতপূর্ব ভয়াল থাবায় মানুষের জীবন যখন জীবন মৃত্যুর দোলাচলে দুলছিল, ঠিক তখনই কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা উপেক্ষা করে তাদের বিভিন্ন স্তরের অনেক কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে। ধারাবাহিক ভাবে দীর্ঘদিন তা চলতে থাকে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপের কারনে চাকুরী চ্যুতির তালিকার বাকী কর্মকর্তারা চাকরীচ্যুতি থেকে রক্ষা পান।