ড. আতিউর রহমান পদ্মা সেতু : বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পথে নতুন মাইলফলক
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশের মাটিতে পা রাখার পরই আমাদেও স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিলো। যুদ্ধের ছাইভস্ম থেকে সমৃদ্ধির পথে অভিযাত্রার বিষয়ে দেশবাসী দারুণ আশাবাদী হয়ে উঠেছিলো বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গুনে। মনে রাখতে হবে যে, তখন দেশের রিজার্ভে এক ডলারও নেই। কোটি শরণার্থী পুনর্বাসনের অপেক্ষায়। সড়ক, রেল, সেতু, বন্দর, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত। কোথাও ফেরি নেই। আশি শতাংশ মানুষ গরিব।
খাদ্যাভাব তীব্র। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন, ‘শ্মশান বাংলাকে আমরা সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলায় আগামী দিনের মায়েরা হাসবে, শিশুরা খেলবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলবো। ক্ষেত-খামার, কলকারখানায় দেশ গড়ার আন্দোলন গড়ে তুলুন। কাজের মাধ্যমে দেশকে নতুন করে গড়া যায়। আসুন সকলে মিলে সমবেতভাবে আমরা চেষ্টা করি যাতে সোনার বাংলা আবার হাসে, সোনার বাংলাকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলতে চাই।’
বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতেও বঙ্গবন্ধু মানুষের অফুরান প্রাণশক্তির ওপর ভরসা করে সমৃদ্ধ সোনার বাংলার ডাক দিয়েছিলেন।
প্রতিক‚ল পরিবেশে বড়ো আশা করার এই যে শিক্ষা তিনি জাতিকে দিয়ে গেছেন সেটিই সবচেয়ে বড়ো পুঁজি হিসেবে আজও আমাদের চলার পথে সবচেয়ে বড়ো পাথেয় হিসেবে কাজ করছে। তাঁর দেওয়া লড়াই করে বেঁচে থাকার এই সামাজিক পুঁজিই সকল সংকটকালে বাঙালির বড়ো সম্পদ হিসেবে বিবেচ্য। তাঁর সেই আশাবাদী নেতৃত্বের পরম্পরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মাঝেও সম্প্রসারিত হতে পেরেছে বলেই আজকের বাংলাদেশ এতোটা সাহসী এবং সফল হতে পেরেছে। এই গণমুখী পরম্পরার বদৌলতেই বাংলাদেশ ক্রমেই ইতিবাচক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়ে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
পদ্মা সেতু সেই বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পথে এক নতুন মাইলফল। আমাদের সামর্থের স্মারক পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে।
শুধু পদ্মা সেতু নয় আরও অনেকগুলো মেগা প্রকল্প এখন দৃশ্যমান। বিশেষ করে মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কের মতো প্রকল্পগুলোও এখন চারদিকে আলো ছড়াচ্ছে। এসব চালু হবার সাথে সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির পুরো চেহারাটাই বদলে যাবে। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের বিস্ফোরণ ঘটবে। আমরা তখন ‘ডাবল ডিজিট’ (দশ শতাংশের বেশি) প্রবৃদ্ধির মহাসড়কে উঠে যাবো।
বড়ো আশা নিয়ে বড়ো প্রকল্প হাতে নেবার প্রথম পরীক্ষা বঙ্গবন্ধুকন্যা পদ্মা সেতুর মতো চ্যালেঞ্জিং মেগা-প্রকল্পটি স্বদেশী অর্থায়নে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই শুরু করেছিলেন। এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১