এক দশক পর আইএমএফ’র কাছে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ আইএমএফ’র ঋণের শর্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন অর্থনীতিবিদরা
মো. আখতারুজ্জামান : রির্জাভের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। রির্জাভের পরিমাণ ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঘরে চলে এসেছে। এই অবস্থান থেকে বেড়িয়ে আসতে কাজ করছে সরকার। বিশ্ব দাতা সংস্থান আইএমএফ’র এর কাছ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে আগামী ৫ বছরে বিশ^ব্যাংক বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ১৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে সোমবার পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল ৪১.৭ বিলিয়ন ডলার।
আইএমএফ’র কাছ থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা। যাতে করে কঠিন শর্ত পালন করতে গিয়ে আমাদের অর্থনীতির ওপর খারাপ প্রভাব না পড়ে।
অর্থনীতিবিদ এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের রির্জাভ বর্তমানে ৪১.৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে চলে এসেছে। ফলে আমাদের রির্জাভ বাড়াতে হবে। আইএমএফ-এর সঙ্গে ঋণের বিষয়ে এখন সবে আলোচনা হচ্ছে। আরও সময় লাগবে। কারণ আইএমএফ হাজারটা শর্ত দিয়ে ঋণ দিয়ে থাকে। তাদের এই শর্তগুলো কি দেয় তা ভালো ভাবে দেখতে হবে। তাদের শর্তগুলো যদি আমাদের জন্য সহজ হয় তালে তাদের কাছ থেকে ঋণ নেয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমার সময় (তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা) আইএমএফ নিজেরাই ঋণের প্রস্তাব নিয়ে আসে। প্রথমে তারা আমাদের কাছে যে শর্ত নিয়ে এসেছিলেন আমি তাদের সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেই। পরে তাদের কাছে চিঠি লেখি। সেই চিঠির আলোকে তাদের সহজ শর্তে ঋণ নেয়া হয়। বর্তমান সরকার আইএমএফ-এর সঙ্গে ঋণের যে আলোচনা করছে সেটা ভালো। তবে তাদের এমন কোন শর্ত মেনে নেয়া ঠিক হবে না যা আমাদের অর্থনীতির ওপর কোন প্রভাব পড়ে। বৈদেশিক ঋণ আমাদের জন্য বোঝা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি এমন পর্যায়ে যায়নি।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম বলেন, সহজ ঋণ যে কোন দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো। বর্তমানে আমাদের রির্জাভের ওপর একটি চাপ রয়েছে। এই চাপ কমাতে বিদেশে ঋণ আমাদের ভালো সহায়ক হিসেব কাজে দিবে। কারণ অভান্তরিণ খাত থেকে ঋণ নিলে ৮ থেকে ৯ শতাংশ সুদ দিতে হয়। আর বাহির থেকে ঋণ নিলে ১ শতাংশ বা দেড় শতাংশ সুদ দিতে হয়।
আইনুল আরও ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পের ঋণ দিয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ দিতে না পেরে তারা আমাদেরকে অন্য প্রকল্পে ঋণ দেয়ার বিষয়ে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে দেখতে হবে বিদেশে ঋণ নিতে গিয়ে তারা যে শর্ত দেয় তা মানতে গিয়ে যাতে অতিরিক্ত কোনো খরচ না হয়।
বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ দিয়ে আগামী প্রায় পাঁচ মাসের আমদানি বিল মেটানো যাবে। সাধারণত বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ তিন মাসের আমদানি কভার নির্ধারণ করে, কিন্তু অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে, তারা ৮-৯ মাসের আমদানি মেটাতে পর্যাপ্ত রিজার্ভ রাখার পরামর্শ দেয়। এছাড়া এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্যে ২ বিলিয়ন অর্থ দেয়ার পর বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যেতে পারে। একই সঙ্গে বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে সরকার নিরুৎসাহ করছে ফলে আমদানি ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে। তবে বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতির মাত্রার পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং রপ্তানি আদেশ উভয়ই মন্থর হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১