মাছ-মাংসের বাজারে মূল্যস্ফীতির প্রভাব
অর্থনীতি ডেস্ক : চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে ইদানিং মানুষ মাছ-মাংস ও ফলফলাদি অনেক কম কিনছেন বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। ইস্কাটন এলাকায় জাকির হোসেন গত ৬ বছর ধরে ফল বিক্রি করেন। ১৫ দিন যাবত তার বিক্রি অর্ধেক কমে গেছে। তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ১০০ ডাব বিক্রি হতো। এখন ৩ দিনেও সে ডাব বিক্রি হয় না। আগে প্রতিদিন আপেল, আম, আনারস, কলা, ডাব ইত্যাদি বিক্রি করে ১৫ হাজার টাকার বিক্রি হতো, এখন দিনে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার বিক্রি হয় মাত্র।
তিনি আরও বলেন, মানুষের হাতে টাকা নাই, চাল-ডালের দাম বাড়তি, তাই মানুষ এখন আগের তুলনায় অনেক কম ফল কিনছেন।
বাদামতলী এলাকার পাইকারি আনার ফল বিক্রেতা আজগর আলী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, তাছাড়া মানুষের হাতে টাকা না থাকায় ফল কম খাচ্ছে এখন। আগে আমি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে দিনে ৩০০-৫০০ কেজি আনার ফল বিক্রি করতাম, বর্তমানে তা হচ্ছে ১৫০-২০০ কেজির মতো।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি মুরগী দোকানদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, করোনার আগে দিনে ৩০০ মুরগী বিক্রি হতো। গত মাসের দিকেও দিনে গড়ে ১৫০-২০০টি মুরগী বিক্রি করতে পারতাম, এখন দিনে ১০০ মুরগী বিক্রি করতেও অনেক কষ্ট হচ্ছে। মানুষ মুরগী খাওয়া কমিয়ে দিয়ে শাক-সবজি বা ডিমের দিকে ঝুঁকছে। কারওয়ান বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা শুক্কুর মিয়া বলেন, ‘রোজা পর্যন্ত দিনে ৩-৪টা গরু বিক্রি করতাম, এখন দৈনিক ১ থেকে ২টা গরুর গোশতও বিক্রি হচ্ছে না।
মাংসের পাইকারি ক্রেতারাও এখন কম অর্ডার দেয়, কারণ তাদের হোটেল-রেস্টুরেন্টে কাস্টমাররা নাকি গরুর মাংস কম খাচ্ছে পয়সার অভাবে, তাই হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিকদেরও এখন গরুর মাংসের চাহিদা কমে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, আগে এই সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজার কাস্টমারে গিজগিজ করতো, আর এখন গরুর মাংসের কাস্টমার শূন্য বাজার দেখেন! ৭ জন কর্মচারীকে বেতন দিয়ে সারাদিনে ১টা গরুর মাংস বিক্রি করতে পারছি না, তাই লাভও হচ্ছে না। এভাবেই চলতে থাকলে হয়তো কোরবানি ঈদের পর আর মাংস বিক্রি করতে পারবো না। এ মাসের ১০ তারিখের পর থেকে অনেক কম বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে হতিরপুল বাজারের মাছ বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, আগে আমার দিনে ২০০-২৫০ কেজি মাছ বিক্রি হতো, আর এখন ১০০-১৫০ কেজি বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই দুই বছর করোনা, এর মধ্যে বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বাড়তি, তারওপর এখন দেশে চলছে বন্যা, তাই মানুষের হাতে টাকা নাই। তাই আমাদেরও বিক্রি কমে গেছে। উচ্চশ্রেণী ছাড়া সবাই এখন কেনা কমিয়ে দিয়েছে। আমাদের বিক্রি কমে গেছে অর্ধেক।
বাজার করতে কারওয়ান বাজারে এসেছেন মোহাম্মদ হাসেম। তিনি বলেন, যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে সেভাবে তো আয় বাড়ে নি। আগে মাসে একবার কিনলেও এখন আর মাংস কেনা হয় না। ভাত আর সবজি খেয়েই দিন পার করছি। ফল কেনার বাড়তি টাকা কই পাবো। এরপর পৃষ্ঠা ৭, সারি ৩