
লোডশেডিং, বিদ্যুৎ ও জালানি সংকট সমাধান কি অসম্ভব?

ভঁইয়া আশিক রহমান : বিদ্যুৎ সরবরাহ দেশব্যাপী বড় মাত্রায় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার বলছে, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যুতের লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে বিশ্ববাজারে দাম চড়া হওয়ায় খোলাবাজার বা স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি কেনা বন্ধ রাখার বিষয়কে তুলে ধরা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর (ক্যাব) জ¦ালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, সরকারের বিবেচনায় চাহিদার তুলনায় দেশে ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। তার মানে ১০ শতাংশ বিদ্যুতের ঘাটতি আছে। এটা বেসিক্যালি পিক পিরিয়ডের হিসাব। ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ ঘাটতি যদি দেশের ৬০০শ উপজেলায় সঠিকভাবে বন্টন করা যায়, পরিকল্পিতভাবে, তাহলে এতো বেশি লোডশেডিং হওয়ার কথা নয়। সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ রাখা, কিংবা এসি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে অনায়াসেই সংকট সহনীয় পর্যায়ে রাখা যাবে। লোডশেডিং শেয়ারিংয়ে পরিকল্পিত কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, জ¦ালানি আমদানি মার্কেটে কবে কমবে, তখন জ¦ালানি আমদানি করে বেশি বিদ্যুৎ করা হবে, সেদিকে চাতক পাখির মতো আমরা তাকিয়ে আছি। এটা বিচার-বিবেচনাহীন চিন্তা। এই চিন্তাচেতনায় কোনো কারিগরি বা কোনো মেরিট আছে বলে মনে হয় না।
ড. শামসুল আলম বলেন, জ¦ালানি তেলের ভর্তুকি অসহনীয়। জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিও অসহনীয় পর্যায়ে পড়েছে। সংকটের বড় দায় হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ চেইনের বিভিন্ন জায়গায় অন্যায়, অযৌক্তিক লুণ্ঠনমূলক ব্যয়, মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা। ল্ণ্ঠুনমূলক ব্যয় কমানোর কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি। মুনাফা, অপচয়, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট এখনো যৌক্তিক করার কথা ভাবা হচ্ছে না। অর্থাৎ এ খাতে দুর্নীতি চলমান থাকবে! আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য কমলেও আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে জ¦ালানি দিতে পারবো না। এটা দুঃখজনক।
তিনি বলেন, জ¦ালানি প্রয়োজন মতো ব্যবহার না করে জ¦ালানি বুভুক্ষু অবস্থা আপনারা মেনে নিলেন। কিন্তু জ¦ালানি সিস্টেম উন্নয়ন হলো না। জ¦ালানি নিরাপত্তা সহায়ক পরিস্থিতিও তৈরি হলো না।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ এ আরাফাতের মতে, ২০০১ থেকে ২০০৬ বিএনপি-জামায়াত আমলে বিশ্বে জ্বালানির কোনো সংকট ছিল না, সংকট ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যথেষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের এবং বাস্তবধর্মী জ্বালানি নীতির। আর ছিল বিদ্যুৎ খাতে চরম দুর্নীতি। যে কারণে বিএনপি আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় শূন্য শতাংশ। আওয়ামী লীগ কিছুদিন আগ পর্যন্তও দেশের শতভাগ মানুষকে লোডশেডিং মুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট বাংলাদেশের ঘাড়েও এসে পড়েছে। এটা তো আর আওয়ামী লীগ সরকারের দোষ নয়। অথচ কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ এই সমস্যাকে বিএনপি আমলের সমস্যার সাথে তুলনা করছে, কী আজব!
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য হলো, সা¤প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পুরো বিশ্বেই জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও কিছুটা বিপদে পড়েছে। দুঃখজনক হলো যে, কোনও দুর্যোগ-দুর্বিপাকে শেখ হাসিনা সরকার কোনও সমস্যায় পড়লেই বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকরা তাদের সস্তা রাজনীতি শুরু করে দেয়। এরা রাজনৈতিকভাবে এতটাই দেউলিয়া যে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য দুর্যোগ-দুর্বিপাকের ওপর নির্ভর করে মানুষের সাময়িক কষ্টকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতউল্লাহ বলেন, বিদ্যৎ ও জ¦ালানি সংকটের মূলে রয়েছে সঠিক পরিকল্পনার অভাব। মেগা মেগা প্রকল্প বানানো হচ্ছে। মেগা প্রকল্প মানে কমিশন। কমিশন নিতে গিয়ে পরিস্থিতি যে এতো খারাপ পর্যায়ে চলে যাবে, তা তাদের ধারণার বাইরে ছিলো। সব পরিকল্পনা তো ইচ্ছামতো বাস্তবায়ন করা যায় না। ফলে এখন বিপদে পড়েছে।
তিনি বলেন, বৈশি^ক সংকট আছে। এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১
