সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনছেন না ব্যবসায়ীরা
মো. আখতারুজ্জামান : কয়েক বছর থেকে কোরবানি পশুর চামড়ার দাম নিয়ে এক ধরণের হতাশা কাজ করছে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মাঝে। সরকার আগে থেকেই চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই দাম পায় না কোরবানির পশুর মালিক থেকে শুরু করে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এবারেও অনেকটা একই চিত্র দেখা দিয়েছে। কয়েক হাজার টাকার লবণ যুক্ত গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে কয়েক’শ টাকায়। ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন তাদের মুলধন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে সরকারকে আরও বেশি কাজ করতে হবে। অন্যথায় এই শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিক হবে। সেই সঙ্গে কেনো সরকার নির্ধারিত মূল্যে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা বেচা হয় না, সেই কারণ খোঁজে বের করে তার সমাধানেরও কথা বলেছেন তারা। তবে, এ বছর সরকারর পশুর চামড়ায় লবণ যুক্ত করে বিক্রয়ের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এতে করে চামড়া পচে যাওয়ার হার অনেকটা কমে এসেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স¤প্রতি চামড়া শিল্প ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করে। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ঢাকার বাইরে ও ঢাকায় বকরি ও খাসির চামড়ার দাম একই। অবশ্য বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান দাবি করেন, সবার জন্যই এবার চামড়া বেচাকেনা ভালো হয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ী, মাদ্রাসা ও এতিমখানা সবাই ভালো দামে চামড়া বিক্রি করতে পেরেছে। পোস্তার আড়তদারেরাও এবার চামড়া কিনে খুশি। আশা করছি, সরকার নির্ধারিত দরে ট্যানারির মালিকেরা চামড়া কিনছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযাই, এবছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। আট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৮১০টি গরু-মহিষসহ মোট ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৭৬৮টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে।
যশোর অঞ্চলের সর্ববহৎ চামড়ারহাট যশোরের রাজারহাটে আড়তদার গিয়াস উদ্দীন পিস হিসেবে ২১৩টি গরুর চামড়া কিনেছেন। ২০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে মৌসুমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই চামড়া কিনেছেন তিনি। এ ছাড়া চার টাকা দরে ৪৮টি ছাগলের চামড়া কিনেছেন। হাটে তিনি ২৩৪টি (গড়ে ৩৫ ফুটের প্রতিটি) গরুর চামড়া ১ হাজার ২৫০ টাকা দরে ঢাকার ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করেন। গিয়াস উদ্দীন বলেন, প্রথম হাটের তুলনায় আজকের হাটে চামড়া বেশি উঠলেও দরপতন ঘটেছে। ঢাকার ট্যানারি মালিকেরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছেন। এতে আমাদের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা লোকশানের মুখে পড়ছেন। এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ৩