মতিনুজ্জামান মিটু: আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ শুরু হয়েছে, বীজতলায় চারা তৈরীর পরও এখনো মাঠে রোপন করা যাচ্ছেনা, চলছে কৃষকের আহাজারি। দিনের পর দিন বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমনসহ এবঙ্গের সবজি ও অন্যান্য ফসলের জমি ফেটে চৌচির হয়ে পড়ে আছে। কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না। বৈদ্যতিক ব্যবস্থার আওতায় সেচ দিয়ে যতসামাণ্য জমিতে রোপা ধানের আবাদ সম্ভব হলেও অধিকাংশের বেলায় সেসুযোগ হয়নি।
পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জের অভিজ্ঞ কৃষক ইমদাদুল হক বলেন, টানা প্রায় ২৫ দিন এঅঞ্চলের ১৬ জেলার অত্যন্ত মূল্যবান জমিতে বৃষ্টির একফোটা পানিও পড়েনি। এজেলাগুলো হচ্ছে; বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনির হাট, রংপুর, নিলফামারি, পঞ্চগড়, ঠাঁকুরগাঁও, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর প্রভৃতি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের সব জমিতে রোপা আমন আবাদের জন্য বীজ তলায় চারা তৈরী করা হয়েছে। অথচ বৃষ্টির অভাবে মাঠে না লাগাতে পারায় এসব চারা হুমকির মুখে রয়েছে। সময় মতো বৃষ্টি না হলে এসব চারা নষ্ট হয়ে যাবে। তৈরী করা লাগতে পারে আবারও রোপা আমনের চারা। এতে মাঠে ধান লাগাতে দেরী ও ফলন কম হতে পারে। ভাদ্র মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত আমনের চারা জমিতে লাগানো যেতে পারে। এতে এবার এ অঞ্চলে রোপা আমন ধান অনেক কম হতে পারে। নাবি অর্থাৎ দেরীতে লাগানোতে ফলন কম হওয়ার ছাড়াও কোন কোন জমিতে রোপা আমন ধান নাও হতে পারে। যত দেরিতে লাগানো হবে ধান ততই কম হবে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের একটি সুত্র জানান, আষাঢ়ের শেষ থেকে শ্রাবণ মাস আমন ধানের চারা রোপণের ভরা মৌসুম। চারার বয়স ৩০ থেকে ৪০ দিন হলে জমিতে রোপণ করতে হয়। রোপা আমনের অনুকূল পরিবেশ উপযোগী উন্নত জাত, যেমন বিআর১০, ব্রি ধান৩০, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৭১, ব্রি ধান৭২, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৭৯, ব্রি ধান৮০, ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৯০, ব্রি ধান৯১, ব্রি ধান৯৩, ব্রি ধান৯৪, ব্রি ধান৯৫, ব্রি হাইব্রিড ধান৪, ব্রি হাইব্রিড ধান৬, বিনা ধান৭, বিনা ধান১১, বিনা ধান১৬, বিনা ধান১৭, বিনা ধান২২, বিনা ধান২৩ প্রতিকূল পরিবেশ উপযোগী উন্নত জাত চাষ করতে পারেন; খরাপ্রবণ এলাকাতে নাবি রোপার পরিবর্তে যথাসম্ভব আগাম রোপা আমনের (ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৬৬, ব্রি ধান৭১ এসব), লবণাক্ত ও লবণাক্ত জোয়ারভাটা অঞ্চলে ব্রি ধান৭৩, ব্রি ধান৭৮, অলবণাক্ত জোয়ারভাটা অঞ্চলে ব্রি ধান৭৬, ব্রি ধান৭৭ এবং জলাবদ্ধতা সহনশীল জাত ব্রি ধান৭৯ চাষ করা যেতে পারে।