একনেকে ৩টি নতুন ও ৩টি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন
সোহেল রহমান : চুনকুড়ি নদীর ওপর চুনকুড়ি সেতু নির্মাণসহ তিনটি নতুন প্রকল্প এবং ৩টি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে ‘জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি’ (একনেক)। এর মধ্যে নতুন অনুমোদিত তিন প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে তিন সংশোধিত প্রকল্পে মোট ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিং-এ পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে ৭৪৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক (জেড-৭৬০৬)-এর ২৮তম কিলোমিটারে চুনকুড়ি নদীর উপর চুনকুড়ি সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করছে ‘আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট’। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলা। চুনকুড়ি সেতু নির্মাণের মাধ্যমে খুলনা জেলার সাথে দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও উন্নত সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপিত হবে এবং সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় অর্থনৈতিক ও পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
তিনি জানান, অপর দুটি নতুন প্রকল্প হচ্ছেÑ ৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ (বসুরহাট)-দাগনভূঁইয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-১৪৮) যথাযথমানে উন্নীতকরণ’ এবং ২৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বরেন্দ্র এলাকায় খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এছাড়া বৈঠকে ৩টি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে
‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৪৬৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মূল প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২ হাজার ৩১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। বর্তমানে দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে ব্যয় আরও বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২ হাজার ৭৭৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
তিনি জানান, অপর দুটি সংশোধিত প্রস্তাবের মধ্যে ‘আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নদী বন্দর স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৪৫৮ কোটি টাকা (মূল প্রস্তাবে ছিল ১,২৯৩ কোটি টাকা, সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৭৫১ কোটি টাকা) এবং ‘বিসিক মুদ্রণ শিল্প নগরী (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ১২৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা (মূল প্রস্তাবে ছিল ১৩৮.৭০ কোটি টাকা, সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৪.৫৫ কোটি টাকা)।
প্রসঙ্গক্রমে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেক সভায় লোডশেডিং নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী হয়তো সেপ্টেম্বরে আস্তে আস্তে লোডশেডিং কমে যাবে।
‘দেশের পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে’ এমন দাবি করে তিনি বলেন, অনেকে বলেছিলেন যে, দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেল। শ্রীলঙ্কা হয়নি দুই মাস হয়ে গেল। রিজার্ভ নামছিল, এখন টেকসই অবস্থায়। রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। ঈদের পরে বেশি রেমিট্যান্স পেয়েছি। ৩০ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়েছে। এক্সপোর্ট ভালো, এছাড়া রাজস্ব আদায়ও ভালো। আমরা খাদে পড়ব না, বরং খাদ থেকে উঠব। জ্বালানি ধীরে ধীরে বিশ্ব মার্কেটে নামছে। জ্বালানি সমন্বয় করব।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া পৃথিবীর চার শতাংশের এক শতাংশ খাদ্য উৎপাদন করে। ভয় কেটে যাবে আশা করছি। সমতল ধারায় ফিরে যাবে দেশের অর্থনীতি। এই বিশ্বাস আমাদের আছে।