১ কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার
সোহেল রহমান : পৃথক দুটি লটে ১ কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৫ হাজার মেট্রিকটন ডাল কেনাসহ ১৬টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৮৯৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক সাংবাদিকদের জানান, টিসিবি’র মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য পৃথক দুটি লটে ১ কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭৩ দশমিক ৯৫ টাকা দরে ‘সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড’-এর কাছ থেকে ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ৬৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
তিনি জানান, অপর একটি প্রস্তাবে ৮৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই লটে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে ১৭১ টাকা দরে। এর মধ্যে ‘এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড’-এর কাছ থেকে ২০ লাখ লিটার, ‘বসুন্ধরা মাল্টিফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড’ থেকে ৩৫ লাখ লিটার এবং ‘সিনো এডিবল অয়েল লিমিটেড’-এর কাছ থেকে থেকে ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।
এছাড়া প্রতি কেজি ১১১ টাকা দরে ৫ হাজার টন মশুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে ‘কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী)-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়ক কুষ্টিয়া থেকে মেহেরপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ কাজটি পেয়েছে ‘জহিরুল লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
তিনি জানান, ঢাকা ওয়াসার ‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনাবল ওয়াটার প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ নং-৩.২ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ কাজটি পেয়েছে চীনের ‘চায়না জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’। এতে ব্যয় হবে ৩৭২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ১ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড প্রিল্ড ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ৫৩৬.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
তিনি জানান, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩য় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ৫৩৩.২৫ ডলার হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৫১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ৪র্থ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ৫৩৪.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
সৌদি আরব থেকে একই চুক্তির আওতায় ৫ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ৫২৪.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জিসিবি কার্গো হ্যান্ডেলিং অব্যাহত রাখতে ছয়টি লটে পাঁচটি বার্থে ৫ বছর মেয়াদে কন্টেইনার বার্থ অপারেটর নিয়োগের ছয়টি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর মধ্যে ৭৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে লট নং-১ (বার্থ নং-৬)-এ ‘মেসার্স এফ কিউ খাঁন অ্যান্ড ব্রাদার্স লিমিটেড’; ৭৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে লট নং-২ (বার্থ নং-৯)-এ ‘ফজলী সন্স লিমিটেড’; ৭৭ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে লট নং-৩ (বার্থ নং-১০)-এ ‘মেসার্স বশির আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানী লিমিটেড’ ৭৭ কোটি ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে লট নং-৪ (বার্থ নং-১১)-এ ‘মেসার্স এ অ্যান্ড জে ট্রেডার্স’; ৭৭ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে লট নং-৫ (বার্থ নং-১২)-এ ‘এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেড’ এবং ৭৭ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে লট নং-৬ (বার্থ নং-১৩)-এ ‘এম এইচ চৌধুরী লিমিটেড’-কে বার্থ অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সভায় ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ (চট্রগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌপথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ)’ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়ে কমিটি। প্রকল্পের প্যাকেজ নং-এসআইএ -(লট-২ এবং ৩) এর আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে যৌথভাবেÑ (১) জেপিএন, মালয়েশিয়া (২) ডিইএমএএস, নেদারল্যান্ডস এবং (৩) জেপিজেড কনসাল্টিং, বাংলাদেশ। এতে ব্যয় হবে ৮২ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, ক্রয় কমিটির বৈঠকের আগে অর্থমন্ত্রীর সভপতিত্বে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় পিপিপি-এর অধীনে ঢাকার মিরপুরে ‘ইন্টিগ্রেটেড টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটি পিপিপি প্রকল্প তালিকা থেকে বাতিলের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।