মালিক ও শ্রমিক মিলেমিশে কাজ করলে শোভন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী
সোহেল রহমান : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেছেন, তৈরী পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মালিক ও শ্রমিক উভয়কেই দায়িত্বশীল হতে হবে। অতি সম্প্রতি আমাদের তৈরী পোশাক খাতের গ্রোথ বেশ ভাল। এ ধারাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তৈরি পোশাক খাতের অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। এজন্য আরও কাজ করার সুযোগ আছে। সমস্যা থাকবে। আমাদেরকে একটি ব্যালেন্স ওয়ে-আউট বের করতে হবে। একে অপরের প্রতি দোষারোপ না করে আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকেও এসব ক্ষেত্রে আরও পরিস্থিতির উন্নতির তাগাদা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
বুধবার ঢাকায় ব্র্যাক সেন্টারে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সিপিডি’ ও ‘খ্রিস্টান এইড বাংলাদেশ’ কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ‘রিসেন্ট আরএমজি গ্রোথ ঃ হোয়াট লেসন্স উই লার্নড এবাউট ডিসেন্ট এমপ্লয়েমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতকে অনেক প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। গ্রীণ ফ্যাক্টরি গড়ে তুলতে বিপুল বিনিয়োগ হচ্ছে। ফ্যাক্টরিগুলোকে কর্মবান্ধব করে তুলতে ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় তৈরী পোশাকের বিক্রয় মূল্য বাড়ছে না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে মূল্য কমছে। সে বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, কারখানায় শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় দর-কষাকষির জন্য ট্রেড ইউনিয়ন থাকা দরকার। আমরাও সেটা চাই। তবে এ সকল ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের শিক্ষিত হতে হবে। তাদের শ্রমিক ও মালিকের স্বার্থ বুঝতে হবে। প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে হবে, প্রতিষ্ঠানের প্রতি দরদ থাকতে হবে। জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। শ্রমিকদের স্বার্থ, সুযোগ-সুবিধা দেখার দায়িত্ব কারখানার মালিকের। শ্রমিকদের আয়, পোশাক-আশাক, চলনে-বলনে ও দক্ষতায় আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। এসব কারণে পোশাক খাতেও সমৃদ্ধি বেড়েছে।
কর্মশালায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে সিপিডি’র জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, করোনা কেটে যাওয়ার পর পোশাক খাতের শ্রমিকের কাজ করার হার ২০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু আশঙ্কাজনক হলো, দেশে যে নারী শ্রমিক একটা সময় ৮৫ শতাংশ ছিল, সেটি ধীরে ধীরে কমে ৬৮ শতাংশে নেমে এসেছে। কেন এই নারী শ্রমিকের আধিক্য পোশাক খাতে কমে এলো, তা নিয়ে গবেষণার দাবি রাখে।
তিনি জানান, শ্রমিকের আয়ের তুলনায় ব্যয় সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়েছে। ব্যয় সামলাতে তারা এখন আগের থেকে বেশি কাজ করছে। এতে ৮৪ শতাংশ কারখানায় অতিরিক্ত কাজের চাপের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পোশাক কারখানাগুলোতে গড়ে ৪০ জন করে শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। নারী শ্রমিকের প্রতি যৌন হয়রানি কমলেও সাম্প্রতিক সময় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা সাবকন্ট্রাক্টের কারখানায় বেড়েছে।
অনেক কারখানায় শ্রমিকরা যথাযথ আইনি অধিকার পায় না উল্লেখ করে ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ব্র্যান্ড বায়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর লেবার রাইট ইস্যুতে মনিটরিং আগের তুলনায় কমেছে। এর বিপরীতে সাম্প্রতিক সময় পোশাক কারখানাগুলোতে ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলোর অর্ডার বেড়েছে।