রাজধানীতে পেঁয়াজের সঙ্গে কিছুটা সবজির দাম কমলেও ফের বেড়েছে ডিমের অপরিবর্তিত মুরগি
মাসুদ মিয়া: রাজধানীতে কিছুটা সবজির ও পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও ফের আবারও বেড়েছে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির। সপ্তাহ ব্যবধানে ডিমের ডজনে দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা। এদিকে অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়েছিল কাঁচামরিচের। যেভাবে দাম বেড়েছে সেভাবেই আবার কমেছে। তবে ডিমের দাম বাড়লেও পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম ও পেঁয়াজের দাম পরিবর্তন হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির দাম। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে বেশিরভাগ সবজির দামও। পাশাপাশি মাছের দামেও তেমন পরিবর্তন আসেনি। সবজি, মাছ, মুরগি আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ১৩০ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১২০ টাকা। ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে লক্ষিবাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আলী বলেন, মাঝে ডিমের ডজন ১৬০ টাকা হয়েছিল। সে সময় ডিমের চাহিদা কমে যায়। যার প্রেক্ষিতে দাম কমে ডজন ১২০ টাকা নেমেছিল।
গত দুই-তিন দিন ধরে পাইকারিতে ডিমের দাম বাড়তি। আমাদের ধারণা ডিমের বিক্রি বাড়ায় এই দাম বেড়েছে।
এদিকে ডিমের দাম বাড়লেও কমেছে পেঁয়াজের দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আর পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকার ওপরে ছিল। পেঁয়াজের এই দাম কমার বিষয়ে পাঁচ ভাই ঘাটলেন বাজারের ব্যবসায়ী নাজমুল বলেন, বাজারে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে দাম কমেছে।কিছুদিন আগে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে কাঁচা মরিচের কেজি ২০০ টাকা হয়ে যায়। তবে গত সপ্তাহে দাম কমে কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ টাকায় নেমে আসে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। গত সপ্তাহের মতো বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ ১৫ টাকায় বিক্রি করছেন। আর এক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
কাঁচা মরিচের পাশাপাশি অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির দাম। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি করছেন ১৮০ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর ব্রয়লার মুরগি কেজি ২০০ টাকায় উঠেছিল। তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনানি মুরগির দাম। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর সোনানি মুরগির কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা বিক্রি হয়।
এদিকে বাজারে নতুন সবজি হিসেবে শিম ও ফুলকপি প্রায় এক মাস ধরে পাওয়া যাচ্ছে। দামও কমতে শুরু করছে।
আগের মতো বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম। গত সপ্তাহে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিম এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। শিমের দাম কিছুটা কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে পাকা টমেটো, গাজর এবং বরবটির দাম। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
এদিকে অধিকাংশ সবজির দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা কমেছে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপের কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কচুর লতি, ঝিঙে, চিচিঙ্গা কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা।
সবজির দামের বিষয়ে কলতাবাজারের ব্যবসায়ী সাদ্দাম বলেন, শীতের সবজি বাজার আসতে শুরু করেছে তার প্রভাব সবজির বাজারে। সে জন্য কিছুটা সবজির দাম কমেছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি।
দাম অপরিবর্তিত থাকলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি এবং ইলিশ। চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
এদিকে চালের দাম কেজিতে ২ টাকা থেকে ৩ টাকা কমেছে প্রতিকেজি মিনিকেট ও বাশমতি নামের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৭০-৭২ টাকায়। নাজিরশাইল চাল ইতোমধ্যে ৭৫ টাকা। এছাড়া খুচরা বাজারে বিআর ২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, এ ছাড়া মোটা জাতের চালের মধ্যে স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা ছিল। ডালের বাজারেও কোনো স্বস্তি নেই। মোটা মসুর ডাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। ভালো মানের দানার মসুর ডাল বর্তমানে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবিসয়ে রাজধানী রায়সাহেব এলাকার বাসিন্দা কামাল বলেন, দ্রব্যমূল্য প্রতিনিয়ত অকল্পনীয়ভাবে বেড়েই চলেছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত মানুষেরা সংসার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও ইনকাম বাড়তেছে না।