সোহেল রহমান : ব্যাংক ঋণের সুদহারের সীমা তুলে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সব দেশে ব্যাংক ঋণে সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে নয়-ছয় শতাংশ সুদের হার যেভাবে কার্যকর করেছি, এটা ভালোভাবেই চলছে। আমাদের মতো দেশে সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কাজ। ইন্টারেস্ট রেট নির্ভর করে ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ওপর। আমরা আস্তে আস্তে মার্কেট বেইজ লেনদেনে যাবো। এতদিন যেভাবে প্রাইজ ঠিক করে দিতাম, সেভাবেই যাবো। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা আর্থিক নীতি (ফিসকাল পলিসি) ও মুদ্রানীতি (মনিটারি পলিসি) অ্যাপ্লাই করে কাজটি করি, বাংলাদেশ ব্যাংক সেই কাজটি করে থাকে।
অপর এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ হয়। বিশ্বের সব দেশে এ নিয়ম মানা হয়। বাজারই নির্ধারণ করবে মুদ্রার দাম। বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের চলতে হবে এবং আস্তে আস্তে সে দিকেই যেতে হবে। মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার পদ্ধতি চালুর বিষয়টি আমরা চিন্তাভাবনা করছি। আমরা অ্যাডভান্স ইকোনমির দেশগুলো যেভাবে কারেন্সিকে ডিল করে সেভাবে আমরা চিন্তা করবো। তারা যেভাবে ঠিক করে দেয়, সেভাবে ঠিক করে দেবো।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে, এটি কমতেই থাকবে কি নাÑ জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের ফরেন রিজার্ভ কমছে। প্রতি বছর আমাদের কতটা পেমেন্ট লাগে? আমাদের অবস্থান আগের চেয়ে ভালো। এক্সপোর্ট বাড়ছে, ইমপোর্ট কমছে। পাশাপাশি রেমিট্যান্স অনেক দ্রুত বাড়ছে। আমরা এক বছরে রেমিট্যান্স অর্জন করেছিলাম ২৪ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ মাসে দুই বিলিয়ন ডলার করে। এখন কিন্তু মাসে দুই বিলিয়নের ওপর চলে গেছে। আমাদের এ ডলারের জন্য কাউকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে না। পেমেন্ট করতে হচ্ছে লোকাল যারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। এখানে কোনো ডলার এক্সচেঞ্জ হয় না। আমরা মনে করি, যে পরিমাণ রেমিট্যান্সের মাধ্যমে ডলার পাচ্ছি, তাহলে যেভাবে ৪৮ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছিলাম, সেখানে আমাদের যেতে বেশি দিন সময় লাগবে না।
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আনার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এক দেশের মুদ্রা আরেক দেশে গ্রহণ করতে হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিশেষ করে ডলার ব্যবহার করতে হয়। আমাদের যেটা করতে হবে কারেন্সি কিছু অফ করে রাশিয়াকে একসেপ্ট করাতে হবে। তারা সেটি গ্রহণ করলে আমরা সেটি কাজে লাগাতে পারবো।