চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় বাড়ছে ১,০৪৮ কোটি টাকা
সোহেল রহমান : চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এখন এটি বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অতি সম্প্রতি প্রকল্পটির প্রথম সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, চার কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে। এগুলো হচ্ছেÑ প্রকল্প বাস্তবায়নে কতিপয় নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তি; কতিপয় অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস/বৃদ্ধি; এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইনমেন্টে পরিবর্তনের ফলে ফাউন্ডেশন, সাব-স্ট্রাকচার, সুপার স্ট্রাকচার-এর ডিজাইন পরিবর্তন এবং অর্থায়নের ধরণ পরিবর্তন। চট্টগ্রাম বন্দরের আপত্তি, জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব, ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, লালখান বাজার অংশের নকশা নিয়ে আপত্তি ও বিকল্প সড়ক চালুতে সময়ক্ষেপণ এবং কোভিডের কারণে ধীরগতিসহ নানা কারণে প্রকল্পটি দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে। সর্বশেষ হিসাবে প্রকল্পটিতে এখন পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। এতে কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৫ শতাংশ।
এদিকে সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে ২ বছর। এর আগে ব্যয় না বাড়িয়ে দুই দফা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল। মূল প্রস্তাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ছিল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রথম দফায় ১ বছর (জুন ২০২১ পর্যন্ত), দ্বিতীয় দফায় আরও ১ বছর (জুন ২০২২ পর্যন্ত) এবং সর্বশেষ ২ বছর (জুন ২০২৪ পর্যন্ত) সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ্-আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণের উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ চট্টগ্রাম শহর এলাকা এবং এর দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন; চট্টগ্রাম শহরের মধ্যে অবস্থিত চট্টগ্রাম এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (সিইপিজেড) ও কর্ণফুলী এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড)-এর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন; চট্টগ্রাম শহর কেন্দ্রে ভ্রমণ দূরত্ব ও ভ্রমণ সময় হ্রাসকরণ এবং বিদ্যমান যানজট নিরসন; বিমানবন্দরে যাতায়াত পথ সুগম করা এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন। প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ৫৯৬.১৮ কাঠা ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্রয়; ১৩ হাজার ৩৯ বর্গমিটার স্থাপনার ক্ষতিপূরণ প্রদান; ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫০ দশমিক ২০ বর্গমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ (র্যাম্পসহ); ৩ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৭ বর্গমিটার রি-কনস্ট্রাকশন অব রোড পেভমেন্ট নির্মাণ; ২০ হাজার ২২৩ দশমিক ২০ বর্গমিটার রোড মার্কিং; ৩ লাখ ৮ হাজার ৯৪৭ দশমিক ২০ বর্গমিটার রোড মেইনটেনেন্স; ১ হাজার ৪৬টি বৈদ্যুতিক পোল স্থানান্তর; ৩ হাজার ৩৬৯টি এলইডি লাইট স্থাপন; ১০০টি সিসি টিভি ক্যামেরা (ক্যাবল এবং নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থাসহ); ১২টি টোল প্লাজা নির্মাণ; টিএন্ডটি পোল স্থানান্তর; ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫০ বর্গমিটার প্লাম্বিং সিস্টেম (ফ্লাইওভার ও র্যাম্পসহ); ৬৬৬ মিটার আরসিসি ড্রেন ও ৩৯২১ মিটার ব্রিক ড্রেন নির্মাণ; ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩১৫ বর্গমিটার সৌন্দর্যবর্ধন (ল্যান্ডস্কেপিং); ৮ হাজার ৪৯১ ঘনমিটার মেডিয়ান নির্মাণ; এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কার্যক্রম মনিটরিং ভবন এবং ১৩টি ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রোল রুম নির্মাণ; গ্যাস লাইন স্থানান্তর এবং ওয়াসা লাইন স্থানান্তর।