মসলা উৎপাদনের ঘাটতি ১৫ লাখ টন আমদানিতে লাগে ৯ হাজার কোটি টাকা
মতিনুজ্জামান মিটু : আমদানি করতে না পারলে মুনাফালোভীদের কারসাজিতে দেশের মসলার বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে, ভোক্তারা পড়ে বিপাকে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বগুড়ার শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বাংলাদেশে মসলা জাতীয় ফসলের গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, কৃষি বাংলাদেশের জনমানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার প্রধান উৎস। দৈনিন্দিন পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধে মসলা ফসলের গুরুত্ব অপরিসীম। সীমিত কৃষি জমি ও জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবেলা করে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। তিনি জানান, ২০২১ সালের হিসেব মতে দেশের ৫৮.৫০ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে পাঁচ লাখ হেক্টর জমিতে মসলা উৎপাদন হয় ৪৪.৯৬ লাখ টন। ঘাটতি থাকে ১৪.৯০ লাখ টন। যা বিদেশ থেকে আমদানি করে মিটাতে হয়। মসলা আমদানিতে লাগে আট হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ হয় ছয় হাজার কোটি টাকা। বর্তমান হিসেবে আমদানি খরচ অনেক বেশি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে মসলার উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানো দরকার।
এলক্ষ্যে চার বছরে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য রোড ম্যাপ করা হলেও আদা, মরিচ এবং কিছু অপ্রচলিত মসলা ফসলের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। যা পূরণ জরুরী। মসলা গবেষণা কেন্দ্র ও বিএআরআই উদ্ভাবিত ৪৭টি উচ্চফলনশীল জাত এবং ১৫৬টি আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর বিস্তারের মাধ্যমে মসলার ঘাটতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
এসব জাতের পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত বীজ উৎপাদন এবং দ্রæত সম্প্রসারণ করা দরকার। পাশাপাশি পরিবর্তনশীল আবহাওয়ায় খাপ খাওয়ানোর উপযোগী টেকসই প্রযুক্তি এবং জাত উদ্ভাবন করা দরকার।
মসলা গবেষণা কেন্দ্র ও বিএআরই উদ্ভাবিত মসলার উন্নত জাত এবং টেকসই প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে চাহিদা পূরণ এবং আমদানি কমানোর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে মসলা জাতীয় ফসলের গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাণিজ্যকরণের মাধ্যমে কৃষিকে লাভজনক করা হবে। এলক্ষ্যে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মসলার উন্নত জাত এবং টেকসই প্রযুক্তিগুলোর বিস্তারে এলাকা চিহ্নিত করা হচ্ছে।