একদিন ব্যবধানে ডিএসইর লেনদেন কমেছে হাজার কোটি টাকার উপরে
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবসে সামান্য পতন হলেও গতকাল সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার বড় ধরনের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। সূচকের সাথে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটর দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর একদিন ব্যবধানে লেনদেন কমেছে হাজার কোটি টাকার উপরে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১ হাজার ২৪ কোটি ১১ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ। যা এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা শেয়ার বিক্রির চাপ এতটাই বেশি ছিল যে, দেড় শতাধিক কোম্পানির বিক্রেতা ছিল, কিন্তু ক্রেতা ছিল না। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৫৫টি কোম্পানির শেয়ারে ছিল ফ্লোর প্রাইস। ফলে শেয়ার বিক্রি করা যায়নি। তাতে লেনদেনও কমেছে।
বাজারে সার্বিক অবস্থা নিয়ে ডিএসই সাবেক এক প্রসিডেন্ট বলেন, বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ভয় ও আতঙ্ক রয়েছে। এ আতঙ্কে একটি গ্রুপ শেয়ার বিক্রি, আরেকটি গ্রুপ প্রফিট টেকিং করেছে। এ দুই কারণে দরপতন হয়েছে।
তিনি বলেন, পতন নরমালি হয়েছে। তবে ভয়ের বিষয় হচ্ছে, বাজার কয়েকটি আইটেমের ওপর নির্ভর করে চলছে। এসব আইটেম বাড়লে ইনডেক্স ও টার্নওভার দুটোই বাড়ছে। আবার কমলে বাজারও নেগেটিভ হচ্ছে। গতকাল ডিএসইতে ২৬ কোটি ৯৪ লাখ ৬৪ হাজার ৬৪টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার মূল্য ১ হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে হাজার কোটি টাকার বেশি।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭১টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে ৫৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৫৯ টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৩৬ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ২৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন বেক্সিমকো লিমিটেডকে টপকে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস। দ্বিতীয় স্থানে নেমেছে বেক্সিমকো। লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- অরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো লিঃ, বিএসসি, জেএমআই হসপিটাল, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাফার্জহোলসিম, অরিয়ন ইনফিউশন, এ্যাকমী ল্যাবরেটরিজ, বসুন্ধরা পেপার, শাইনপুকুর সিরামিকস।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ইনডেক্স এগ্রো, মীর আখতার হোসাইন, সী পার্ল বীচ, বসুন্ধরা পেপার, এডভেন্ট ফার্মা, বিডিকম অনলাইন, ডোরিন পাওয়ার, আরএসআরএম স্টিল, এডিএন টেলিকম ও ইন্দো-বাংলা ফার্মা।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- জুট স্পিনার্স, বিডি ওয়েল্ডিং, ইস্টার্ন ক্যাবলস, নর্দান জুট, এটলাস, সিনোবাংলা, সোনালী আঁশ, আজিজ পাইপস, কোহিনুর কেমিক্যালস ও জিকিউ বলপেন। দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩০ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ বাজারে ২৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১০৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১২০ কোটি ৬৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৭৭ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৯ কোটি ৫০ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৭ টাকার শেয়ার।