সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবস পতন হলেও গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সামান্য উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচক বাড়লেও টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। আর লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশীর ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লেনদেন হওয়া ৪০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছিল। ফলে প্রয়োজন থাকা সত্বেও শেয়ার বিক্রি করতে পারেনি এসব কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা। পাশাপাশি বস্ত্র, ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারের বিক্রির প্রবণতায় বেশি ছিল। ফলে সূচক সামান্য বাড়লেও কমেছে লেনদেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ডিএসইতে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকায়। রেকর্ড এ লেনদেনের পরেই বুধবার সূচকের বড় পতন হয়। সেইসঙ্গে কমে লেনদেনও। আর গতকাল আরও কমে লেনদেন হয়েছে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। তবে, লেনদেনের এক পর্যায়ে বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। এতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষদিকে বড় মূলধনের কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লে পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় প্রধান সূচক। তবে, বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৮টির। আর ১৬৬টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৬৪ পয়েন্টে উঠেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ১৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৫২ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯২ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- অরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো লিঃ, বিএসসি, জেএমআই হসপিটাল, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাফার্জহোলসিম, অরিয়ন ইনফিউশন, এ্যাকমী ল্যাবরেটরিজ, বসুন্ধরা পেপার, শাইনপুকুর সিরামিকস।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ইনডেক্স এগ্রো, মীর আখতার হোসাইন, সী পার্ল বীচ, বসুন্ধরা পেপার, এডভেন্ট ফার্মা, বিডিকম অনলাইন, ডোরিন পাওয়ার, আরএসআরএম স্টিল, এডিএন টেলিকম ও ইন্দো-বাংলা ফার্মা।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- জুট স্পিনার্স, বিডি ওয়েল্ডিং, ইস্টার্ন ক্যাবলস, নর্দান জুট, এটলাস, সিনোবাংলা, সোনালী আঁশ, আজিজ পাইপস, কোহিনুর কেমিক্যালস ও জিকিউ বলপেন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৩টির এবং ১০৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।