গ্রামীণ উন্নয়নে জাইকার ৬০ কোটি ডলার পাওয়ার আশা পরিকল্পনামন্ত্রীর
এস.ইসলাম জয় : গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কাছ থেকে ৬০ কোটি ডলার বাজেট সাপোর্ট পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রীর এম এ মান্নান। তিনি বলেন, জাপান আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা আমাদের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগীতা করে আসছেন।
সোমবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি ইয়ো হায়াকাওয়া পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাত করেন। সাক্ষাত শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
জাইকার বাজেট সাপোর্ট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন জাইকা বাজেট সহায়তা চেয়ে কিছু আভাস দিয়েছে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে আগামীতে ইতিবাচক বলে মনে হয়েছে। বাকী বিষয়গুলো ইকোনোমিক রিলেশনস ডিভিশন ( ইআরডি) দেখবে। তবে সকলের কিছু আইন কানুন ,নিয়ম নীতি আছে। এগুলো মেনেই কাজ করতে হবে। তিনি বলেন আমার বিশ্বাস সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর বাজেট সাপোর্ট পাবো। জাইকার আবাসিক বিদায়ী প্রতিনিধি ইয়ো হায়াকাওয়ার সঙ্গে আলোচনা সর্ম্পকে মন্ত্রী বলেন পরিবেশটা অনেকটা ইতিবাচক। ৬’শ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী বাজেট সহায়তা আমাদের দেবে। আড়াইহাজারে জাপানি অর্থায়নে ইকোনোমিক জোন হচ্ছে সেখানে কাজ করতে চায় জাইকা। এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্রকল্পটি দ্রæত সময়ে একনেক সভায় উঠবে। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুতে জাপান কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে জাইকা আরও আগ্রহী। এই খাতে তারা কাজ করতে ইচ্ছুক। আমাদের নৌবন্দরগুলোতে আরো কাজ করতে চাই। সেখানে তাদের সহযোগীতা আমরা চেয়েছি। অবকাঠামো খাতে জাইকা বেশি কাজ করতে চায়। রেল, সমুদ্র খাত নিয়ে কাজেও তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, তবে এটা আলোচনা পর্যায়ে আছে এখনো চ‚ড়ান্ত হয়নি। যেহেতু আমি সরকারের একটা দায়িত্বে আছি তাই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা আলোচনার জন্য আমি সঠিক জায়গা নয়। এটা নিয়ে কাজ করবে ইআরডি, তবে যেহেতু সরকারে আছি মন্ত্রণালয়ে উঠেছি সুতরাং আলোচনা করেছি।
দেশে নিযুক্ত জাইকার নতুন আবাসিক প্রতিনিধি ইচিগুচি টমোহাইড বলেন, আমি কিন্তু নতুন হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করতে আসি নাই। গত ১০ বছর আগ থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি। বাংলাদেশের নানা মেগা প্রকল্পে আমি কাজ করেছি। জাপন ডেস্কে বসেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে আমি অবদান রেখেছে যেমন মেট্রোরেল, মেঘনা-গোমতি-কাঁচপুর সেতু, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি।
সুতরাং আমার কিছু পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার। এদিকে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) নতুন হয়েছেন ইচিগুচি টমোহাইড। এক সপ্তাহ আগে দেশে যোগদান করেছেন। তিনিও মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি আরও বলেন, আমি কিন্তু জাপানে বসেও বাংলাদেশের জন্য কাজ করেছি। আমার বয়স ও বাংলাদেশের বয়স একই। দেশে না থাকলেও জাইকা ডেস্কে বসে কাজ করেছি। নানা দিক থেকে আমি কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ট।
জাইকার বিদায়ী আবাসিক প্রতিনিধি ইয়ো হায়াকাওয়া বলেন,আমি বাংলাদেশে দীর্ঘ তিন বছর কাজ করেছি। নানা খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে আমি নিবিড়ভাবে কাজ করেছি। ঈর্শনীয়ভাবে বাংলাদেশের অর্জন সত্যিই বিষ্ময়কর।
এখানের পরিবেশ এবং মানুষ খুবই আন্তরিক,আমি অভিভূত। এখানে কাজ পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে। বাংলাদেশের অর্জন সত্যিই বিষ্ময়কর। হাইয়াকাওয়া বলেন, দেশে এখানে দীর্ঘ দিন কাজ করে আমরা মনে হয়েছে সব খাতে বাংলাদেশ ভালো করছে। করোনা সংকট মোকাবিলাসহ নানা খাতে বাংলাদেশের অর্জন বিস্ময়কর।
উল্লেখ্য এর আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সাথে সাক্ষাতকারে জাইকা প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, জাইকার সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশ বিভিন্ন অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সূচকে বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের থেকে বর্তমানে অনেক এগিয়ে রয়েছে। সহযোগিতার সফল বাস্তবায়নের কারণে এ মুহূর্তে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতার তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশর অবস্থান অন্যতম। বিভিন্ন সামাজিক সূচকে অগ্রগতি অর্জনের মাধ্যমে উন্নয়নের একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ।