আইনী বিধি-বিধানসমূহ আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ও দেশীয় বাস্তবতার নিরীখে সংস্কারের পরামর্শ
সোহেল রহমান : স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণে আইনী বিধি-বিধানসমূহ আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ও দেশীয় বাস্তবতার নিরীখে অতি দ্রæত সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ এবং চলমান রাখতে হবে।
এছাড়া কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা সম্পন্ন-পূর্বক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; এলডিসি থেকে উত্তরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর আওতাধীন বিভাগসমূহের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে জরুরী ভিত্তিতে কর্মসূচী গ্রহণ; কর-সংক্রান্ত বিধি-বিধান ও পদ্ধতি সংস্কার চলমান রাখা; মানব সম্পদ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ এবং কাঠামোগত সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গঠিত কর সংক্রান্ত বিধি-বিধান ও পদ্ধতি সংস্কার বিষয়ক স্টাডি গ্রæপ-২-এর সময়াবদ্ধ কর্ম-পরিকল্পনার উপসংহারে এসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ফলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি, পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং-এর জন্য গত বছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। ওই জাতীয় কমিটি’র সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ ও শুল্ক যৌক্তিককরণ বিষয়ক একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত উপ-কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও কাস্টমস সংক্রান্ত বিধি-বিধান ও পদ্ধতি সংস্কার বিষয়ক পর্যালোচনা-পূর্বক একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিবেদন প্রণয়নের লক্ষ্যে ৯ সদস্য বিশিষ্ট স্টাডি গ্রæপ গঠন করা হয়।
সূত্রমতে, শুল্ক বিভাগ, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বিভাগ ও আয়কর বিভাগের জন্য পৃথক পৃথক সময়াবদ্ধ কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে স্টাডি গ্রæপ-২। ইতোমধ্যেই এসব কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। আয়কর বিভাগের সময়াবদ্ধ কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেÑ সমন্বিত ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন কৌশলপত্র প্রণয়ন করা; বাংলা ভাষায় নতুন আয়কর আইন প্রণয়ন; অন-লাইন সেবা বাড়ানো; বিশেষায়িত ইউনিট স্থাপন ও আয়কর ট্রাইব্যুনালের সংস্কার; মানব সম্পদ উন্নয়ন ও গবেষণা; কর পরিপালন; সংস্কার ও গবেষণা এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি।
মূসক বিভাগের সময়াবদ্ধ কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেÑ মূল্য সংযোজন কর আইন ও বিধির প্রয়োজনীয় সংস্কার করা; অটোমেশন সম্পন্ন করা; দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ পর্যালোচনা; ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনা; ই-কমার্স খাত থেকে ভ্যাট আদায় বাড়ানো; কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমিয়ে আনা এবং ভ্যাটের আওতা বাড়ানো।
শুল্ক বিভাগের সময়াবদ্ধ কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেÑ শুল্কহারকে বাউন্ড রেটের মধ্যে আনার জন্য বিশ^ বাণিজ্য সংস্থায় (ডবিøউটিও) বাংলাদেশের শিডিউল পর্যালোচনা; ন্যূনতম আমদানি মূল্য তুলে দেয়ার জন্য একটি ফেইজ-আউট পরিকল্পনা প্রণয়ন; সম্পূরক শুল্ক ও রেগুলেটরি ডিউটিকে স্টিম-লাইন করার জন্য একটি কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করা; অন্যান্য দেশ কর্তৃক গৃহীত হয়নি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নীতির আলোকে বাংলাদেশের বিদ্যমান নীতিসমূহ পর্যালোচনার জন্য একটি গবেষণা পরিচালনা; ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি-তে পর্যায়ক্রমে শুল্কহার কমানোর বিষয়টি সন্নিবেশ করার জন্য ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি সম্পর্কিত আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি কর্তৃক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি সম্পর্কিত কমিটি কর্তৃক কতিপয় বিষয় ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি-তে অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা; বিশ^ বাণিজ্য সংস্থার ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট এবং কাস্টমস মডার্নাজাইশেন প্ল্যান দ্রæত বাস্তবায়ন।