ড ইউপি চেয়ারম্যানের গাড়ি ব্যবসার ফাঁদে এমপি সরকারী কর্মকর্তাসহ ৭ শতাধিক ব্যক্তি
মাসুদ আলম : গাড়ি ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের দেওয়া তথ্যে আরও ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ। জাকির হোসেন কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, জাকির প্রতারণার মাধ্যমে ৬০ থেকে ৭০ টি গাড়ি দেখিয়ে বিভিন্ন পেশাজীবী ৬০০ থেকে ৭০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা ও সরকারের এমপি রয়েছেন। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে স্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন।
তিনি বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ২টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও আত্মসাৎকৃত ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জাকির চেয়ারম্যান পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি ক্রয় করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নেয়। পরে ক্রয়কৃত গাড়ি রেন্টে কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য চুক্তি করে। তিনি একই গাড়ির বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ভুয়া কাগজপত্র দ্বারা চুক্তিবদ্ধ হয়। তাছাড়া একই রেজিস্ট্রিশন নম্বর সম্বলিত গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রয় করতো। হারুন বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচলনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধ করে। পরবর্তীতে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয় ও গাড়ি ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও পূর্বের বিক্রয়কৃত গাড়ি স্বল্প মূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জাকির ৫-৬ জনের সহযোগীর সহায়তায় প্রতারণা করতো। আনুমানিক হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। মুন্সীগঞ্জ, বিক্রমপুরে একটি গ্রামে লোকদের কাছে ১২২টি গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করেন। জাকির হোসেন তার প্রতিষ্ঠান আর. কে. মটরসের নামে এবং তার আত্মীয় স্বজনের নামে ২৭টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১২টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে।