দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা পণ্যের দাম বাড়িয়েছে : এফবিসিসিআই
মো. আখতারুজ্জামান : মাছ, মাংস, ফলমূলসহ শাক-সবজির আধুনিক সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে উৎপাদক এবং ভোক্তা পর্যায়ে দামের ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন কাঁচাপণ্য আড়তদার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত স্ট্যান্ডিং কমিটি অন কাঁচামাল আড়তদার, মার্কেটিং অ্যান্ড সাপ্লায়ার্সের প্রথম সভায় সদস্যরা জানান, কাঁচাপণ্য পরিবহনে বড় প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। কৃষক থেকে আড়ত পর্যন্ত পৌছতে অন্তত ৩০ শতাংশ পণ্য নষ্ট হয় পরিবহনের সময়। এছাড়া সড়ক পথে চাঁদাবাজির কারণেও পণ্যের ব্যয় বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে ভোক্তা পর্যায়ের দামে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, কাঁচাপণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজির শিকার হয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে প্রায়ই অভিযোগ করেন। ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ চান তিনি। পাশাপাশি, আড়ত এবং বাজারগুলোয় অসাধু প্রতিযোগিতা এবং চাঁদাবাজি রোধে বাজার কমিটিগুলোকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহŸান জানান তিনি।
উন্নত বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে নগরিতে গড়ে ওঠা নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পগুলোতে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বাজার স্থাপনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং আবাসন ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। মাছ, মাংস, শাক-সবজিসহ কাঁচাপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্যের গুরুত্ব তুলে ধরে এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, সারাদেশে কতগুলো আড়ত, মোকাম এবং কৃষি ভাÐার রয়েছে তার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। দৈনিক চাহিদা এবং উৎপাদনের সঠিক তথ্য নিরুপণের মাধ্যমে বাজার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। এছাড়া পণ্য পরিবহনে নিজেদের দুর্বলতা সংশোধনে ব্যবসায়ীদের আহŸান জানান তিনি। পাশাপাশি জোর দেন পণ্যের আধুনিক প্যাকেজিংয়ের উপর।
নিত্যপণ্যের বাজার স্থীতিশীল রাখতে অতীতে এফবিসিসিআইর বিভিন্ন কর্মসূচীর কথা তুলে ধরেন কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ হাফেজ হারুন। যথাযথ গ্যারান্টারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া সহজ বলে অবগত করেন তিনি। সভায় কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি এমরান মাস্টার বলেন, আড়তদারদের নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আসলে আড়তদাররা সরাসরি মূল্য নির্ধারণের সাথে জড়িত না। অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে কৃষকরা এখন সরাসরি পণ্য বিক্রি করে। আড়তদাররা শুধু একটা কমিশন পায়। সরবরাহ বিঘিœত হলেই বাজারে তার প্রভাব পড়ে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পচনশীল পণ্য সংরক্ষণে রাজধানীসহ সারাদেশে পর্যাপ্ত ওয়্যারহাউজ নির্মাণ, কন্ট্রোলড অ্যাটমোস্ফিয়ার বা তাপমাত্রা ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রণ সুবিধা সম্পন্ন স্টোরেজ গড়ে তোলা ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির দাবি জানান বক্তারা। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভরসা, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, ইকবাল শাহরিয়ার, শমী কায়সার, আক্কাস মাহমুদ, সাবেক পরিচালক খন্দকার রুহুল আমিন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মাহবুব ইসলাম রুনু, মো. ওমর ফারুক, মো. নূর মোহাম্মদ, মো. মনিরুল ইসলাম, লুতফুর রহমান বাবুল, সোহেল রানাসহ অন্যান্য সদস্যরা।