
বাংলাদেশে এসেছি কাছ থেকে উন্নয়ন শিখতে : স্বাক্ষাৎকারে বিশ্বজিৎ দ্বৈমারি

বিশ্বজিৎ দত্ত : আসামে বাংলাভাষীদের উপর নির্যাতন বা এনআরসি নিয়ে কোন কথা বলতে চাননা বাংলাদেশ সফরকারী আসামের স্পীকার বিশ্বজিৎ দ্বৈমারি। তিনি শুধু বলেন, আমরা এবারে দেখতে এসেছি আর শিখতে এসেছি। এখানে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই। গত সোমবার বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে সাংবাদিক সম্মেলনের এক ফাঁকে কয়েটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে আসামে ফিরে গেছেন দ্বৈমারি। এরআগে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, বাংলাদেশে তাদের দল কিছু শপিং করবেন।তাই আখাউড়া ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাবে। এর জন্য অন্তত্য রাত ৮ টা পর্যন্ত যাতে আখাউড়ার ইমিগ্রেশান খোলা রাখা যায়। মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন এটা সমস্যা হবে না। আপনারা সীমান্তে না পৌঁছা পর্যন্ত ইমিগ্রেশান খোলা থাকবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি এটির উদাহরণ দিয়ে বলেন এই হলো আমাদের সম্পর্ক। একই রকম ভূপ্রকৃতি, একইরকম জীবনাচার, একই নদী বয়ে গেছে দুই দেশের মাঝ দিয়ে। আসামের ভূপেন হাজারিকা বাংলারও ভূপেন।
বাংলাদেশে সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত অর্থনীতি ও গণতন্ত্র বিকাশের বিভিন্ন দিকে প্রভূত উন্নতি করেছে। বাংলাদেশও উন্নতি করেছে সমান্তরালে। বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়েছে। পদ্মা সেতুর মতো সেতু নিজ অর্থে বানিয়েছে। কিন্তু ভারতের উন্নয়ন অনেক সময় তার প্রান্তিক এলাকায় পৌঁছতে সময় নেয়। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার মানুষজনদের কাছে আমাদের কাজগুলো দেরীতে পৌঁছায়। আমরা বাংলাদেশের কাছ থেকে শিখতে এসেছি তৃণমূল পর্যায়ে কিভাবে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেয়া যায়। আমরা বাংলাদেশের কৃষি বিষয়ক অভিজ্ঞতা নিয়ে যেতে চাই। আসামের বিস্তৃত জমি রয়েছে। কিন্তু যান্ত্রিক উপায়ে কৃষিকে এগিয়ে নেয়ার লোকবলের অভাব রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কৃষি শ্রমিক, কৃষি উদ্যোক্তাদের আসামে নিতে চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার আসামের সঙ্গে কানেকটিভিটি বৃদ্ধির জন্য আমাদের বলেছে। বাংলাদেশ নৌপথে যোগাযোগ বৃদ্ধি ছাড়াও চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দর ব্যবহারের জন্য বলেছে। আসামের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য আরো সীমান্ত হাট খোলার জন্যও আমরা একমত হয়েছি। তিনি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিরও প্রশংসা করেন।
তিনি জানান, আসামের অনেক ছাত্র বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে লেখাপড়া করে। এখানে যাতে সহজে তারা আসতে যেতে পারে। আসামের শিক্ষার্থীদের জন্য যাতে বাংলাদেশ সরকার বৃত্তির সংখ্যা বাড়ায় তার জন্যও অনুরোধ করেছি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর সীমান্তে সংঘাত হ্রাস পেয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম কমে গেছে। আসামের সন্ত্রাসীরা আগে বাংলাদেশে আশ্রয় পেতো। এখন এটি সম্ভব হচ্ছে না। আমরাও বাংলাদেশ থেকে আসামে পালাতক কোন ব্যাক্তিকে আশ্রয় দিচ্ছি না। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের উভয় দেশের সরকার মধ্যে বোঝা পড়ার জন্য। তিনি শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন, উনাকে আমার দেবীর মতো মনে হয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য দেশের জন্য তিনি চিন্তা করেন। পরিশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আবার আসবো। সে সময় হয়তো আরো গভীরভাবে বাংলাদেশকে দেখবো। আপনাকে রাজনৈতিক বিষয়েও কিছু কথা বলবো।
