
শীতে কদর বেড়েছে ভাপা পিঠার

সাহাবুদ্দিন সনু : শীত মানেই তো পিঠা-পুলির দিন। এমন কিছু ভাবনাই তো বাঙালির মানসপটে জায়গা করে নেয়। শীতল আমেজ নিয়ে আসা বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। জমে উঠেছে রাস্তার পাশে পিঠা বেচাকেনার ভ্রাম্যমান দোকানগুলো। বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসেছে বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের সঙ্গেও আলাপ করে জানা গেছে, বেচা-বিক্রি বেশ ভালোই। তাই অনেকেই এই শীতের মৌসুমে পিঠা বিক্রিকে বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। শীতের সন্ধ্যার পর পরেই ভাপা পিঠা বিক্রির দোকানগুলোতে পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সের শ্রেণি-পেশার মানুষ। জেলার শহরের বিভিন্ন মোড়ে এবং মহল্লায় ভ্রাম্যমাণ দোকানে মাটির চুলায় তৈরি হচ্ছে নানান ধরনের পিঠা।
এরমধ্যে রয়েছে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা বানিয়ে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। পিঠা তৈরি করে সংসার চালাতে হয় অনেকেরই। একেক ধরনের পিঠার দাম হয় একেক রকম। সাধারণত চিতই পিঠা ১০ টাকা ও ভাপা পিঠা ১০/১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের গুঁড়া, নারকেল, খেজুরের গুড় দিয়ে ভাপা পিঠা বানানো হয়। গোল আকারের এ পিঠা পাতলা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে ঢাকনা দেয়া হাঁড়ির ফুটন্ত পানির ভাপ দিয়ে তৈরি করা হয়। চালের আঁটা পানিতে মিশিয়ে মাটির খোলায় তৈরি করা হয় চিতই পিঠা। অতি সাধারণ এই পিঠাটি গুড় বা ঝাল মশলা দিয়ে খেতে খুবই মজা। আর এসব রসনায় অনেকেই ভিড় করেন দোকানগুলোতে। ক্রেতারা অনেকেই সেখানেই দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। আবার অনেকেই প্যাকেটে করে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে গ্রামাঞ্চলের বাড়িতে বাড়িতে ধুম পড়ে যায় হরেক রকমের পিঠা বানানোর। ভোর বা সন্ধ্যায় নারীরা চুলোর পাশে বসে দুধ-পুলি, তেলপুয়া পিঠাসহ বিভিন্ন পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এসময় আত্মীয় স্বজনরা বেড়াতে আসলে তাদের পিঠা-পুলি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে শীতের পিঠা তৈরি করতে যে উৎসবের সৃষ্টি হয় সে তুলনায় শহরে খুব কমই চোখে পড়ে পিঠা-পুলির বাহার।
এছাড়া শহরের পথে-ঘাটে বা ফুটপাতে পিঠা কেনাবেচা হয় পুরো শীতকাল জুড়েই। জেলা শহরের পুরাতন বাজার, ওয়ালটন রোড, শিবতলা মোড়, হুজরাপুর মোড়, বিশ^রোড মোড়সহ বিভিন্ন মহল্লার প্রতিটি অলিগলিতে চোখে পড়ে অস্থায়ী পিঠার দোকান। শীত আসলেই এসব দোকান বসে তারা বাড়তি রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
পিঠা বিক্রেতা ওমর ফারুক ও বেদানা বেগম জানান, প্রতিদিন বিকেলে ভ্যানে আর রাস্তার পাশে চূলা বসিয়ে গরম গরম ভাপা পিঠা বানিয়ে বিক্রী করা হয়। ক্রেতাদের আগমনও ঘটে অনেক, ফলে চাহিদানুযায়ী বানানো হয়ে থাকে।
পিঠা খেতে আসা আসিফ হোসেন জানান, নানা ব্যস্ততার কারণে বাসায় পিঠা তৈরি করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই শেষমেশ পিঠার দোকান থেকেই তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য পিঠা কিনে নিয়ে যান। সাধারণত বিকালের নাস্তা হিসেবে পিঠাই বেশ ভালো লাগে। কমবেশি প্রতিদিনই খেতে আসা হয়।
